বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
কলকাতা: রবিবার ১২টা ৫৯ নাগাদ ঐন্দ্রিলাকে (Aindrila Sharma) মৃত ঘোষণা করলেন চিকিৎসকরা। প্রিয় মানুষ সব্যসাচীর হাতটা ছেড়ে তিনি চলে গেলেন চিরকালের মতো না ফেরার দেশে। টলিউডের ছটফটে প্রাণবন্ত মেয়েটার জন্য প্রার্থনা করছিল গোটা রাজ্য। তবুও শেষ রক্ষা আর হল না।
জন্মসূত্রে বহরমপুরের মেয়ে ঐন্দ্রিলা শর্মা। ১৯৯৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্ম। বাবা উত্তম শর্মা মুর্শিদাবাদের হাসপাতালের চিকিৎসক। মা শিখা শর্মা নার্সিং হস্টেলের ইন-চার্জ। দিদিও পেশায় ডাক্তার। ছোট থেকে অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও, ঐন্দ্রিলা প্রথাগত উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে শুরু করেছিলেন। কলকাতার একটি বেসরকারি কলেজে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য ভর্তি হন। যদিও সেই পড়াশোনা অসুস্থতার জন্য শেষ হয়নি। তাঁর স্বপ্নপূরণে গোটা পরিবার এসেছিল কলকাতায় তাঁর সঙ্গে।
২০১৭ সালে ‘ঝুমুর’ ধারাবাহিকের হাত ধরে ঐন্দ্রিলার প্রথম অভিনয় জগতে পা। এই সিরিয়ালেই তাঁর বিপরীতে দেখা গিয়েছিল সব্যসাচী চৌধুরীকে। ঝুমুর ছাড়াও ঐন্দ্রিলাকে একাধিক জনপ্রিয় সিরিয়ালে দেখা গিয়েছে, এর মধ্যে অন্যতম হল জীবন জ্যোতি, জিয়ন কাঠি, ইত্যাদি। এছাড়া তিনি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও বেশ কিছু কাজ করেছেন, যার মধ্যে আছে ভাগাড়, পাঁচফোড়ন ২, ইত্যাদি।
টলিউডে পা রাখার আগেই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। ঐন্দ্রিলার ১৮তম জন্মদিনে ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর বোনম্যারো ক্যানসার ধরা পড়ে। তখন সে একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। কেমো চলার পর লড়াই করে ফেরৎ আসেন তিনি। মাথার সব চুল পড়ে গিয়েছিল তাঁর। তবে সেরে ওঠেন। দিল্লির এইমসে চিকিৎসা হয়েছিল তাঁর। টানা দেড় বছর চিকিৎসা চলার পর ২০১৬ সালে সুস্থ হয়ে ওঠেন অভিনেত্রী।
২০২১ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে জন্মদিনের দিন দশেকের মধ্যে আচমকাই ডান দিকের কাঁধে যন্ত্রণা শুরু হয় অভিনেত্রীর। ফের ফুলফুসে ক্যানসার ধরা পরে তাঁর । অপারেশন, কেমোর পর, সুস্থও হন তিনি। ১ নভেম্বর রাতে আচমকা ব্রেন স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ)। ভর্তি হন হাওড়ার হাসপাতালে। উন্নতি হচ্ছিল শারীরিক অবস্থার। তবে বুধবার ১৬ তারিখ পরপর দুবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। আর তারপর শনিবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় আরো ১০ বার। আর আজ তিনি চলে গেলন চিরঘুমের দেশে।
ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থার খবর তাঁর অনুরাগীদের জানাচ্ছিলেন তাঁর সঙ্গী সব্যসাচী। ২৪ বছরের মেয়েটির সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু ঐন্দ্রিলা এবার আর ফিরে এলেন না। তবুও ঐন্দ্রিলা সারাজীবন থাকবেন আমাদের মনে। তাঁর হার না মানার প্রবণতাকে কুর্নিশ জানাবে সমাজ। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে জিতে ফেরার শক্তি হিসাবে অনুপ্রেরণা হয়ে ভেসে উঠবে ঐন্দ্রিলার মুখ।