Home Third Lead ওমিক্রন রুখতে কার্যকর স্পুটনিক ভি

ওমিক্রন রুখতে কার্যকর স্পুটনিক ভি

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্টের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন। গবেষণায় এমনটাই দাবি রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। রুশ বিজ্ঞানীদের মত, ওমিক্রন ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন নিষ্ক্রিয় করতে পারবে স্পুটনিক ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ নিলে কার্যক্ষমতা আরও বাড়বে। শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে শরীরে।

ওমিক্রনকে ঠেকাতে ভ্যাকসিনও পিছু হটছে। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, করোনার এই প্রজাতি যেভাবে রূপ বদলাচ্ছে তাতে আগামী দিনে ভ্যাকসিন কার্যকর নাও হতে পারে। তবে মেসেঞ্জার আরএনএ টেকনোলজিতে তৈরি ভ্যাকসিন ওমিক্রন ঠেকাতে পারবে বলে আশা করেছেন বিজ্ঞানীরা। রাশিয়ার গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট তৈরি করেছে স্পুটনিক ভি। এই সংস্থার দাবি, দুই ডোজের স্পুটনিক ভি এবং সিঙ্গল ডোজ স্পুটনিক লাইট ওমিক্রনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে। সেক্ষেত্রে যদি বুস্টার ডোজ নেওয়া হয় তাহলে কাজ হবে আরও দ্রুত। অ্যাডাপটিভ ইমিউন রেসপন্স তৈরি হবে শরীরে।

কীভাবে কাজ করতে পারে রুশ টিকা?

অ্যাডেনোভাইরাসকে ভেক্টর হিসেবে ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে এই ভ্যাকসিন। শরীরে ঢুকলে করোনার মতো স্পাইক প্রোটিন তৈরি করে শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে তোলে। মোডার্না ও ফাইজারের ভ্যাকসিনের ডোজও শরীরে ঢুকলে স্পাইক প্রোটিনের অনুরূপ প্রোটিন তৈরি করে কিন্তু স্পুটনিকের মতো নয়। কারণ মোডার্না-ফাইজারের ভ্যাকসিন শরীরে ঢুকে আরএনএ (সিঙ্গল-স্ট্র্যান্ডেড) প্রোটিন তৈরি করে আর স্পুটনিক বানায় ডিএনএ (ডবল-স্ট্র্যান্ডেড)। স্পুটনিক ভ্যাকসিন যে প্রোটিন বানায় তার মধ্যে ভাইরাসের জেনেটিক ইনফরমেশন বা জিনগত তথ্য থাকে। এই প্রোটিনের খোঁজ পেলেই শরীরের ইমিউন কোষ (বি-কোষ বা টি-কোষ) সক্রিয় হয়ে প্রোটিনের আগাগোড়া ভাল করে চিনে রাখে। সংক্রামক ভাইরাল প্রোটিন ঠিক কেমন, তার বিরুদ্ধে কেমনভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে তার একটা ছকও সাজিয়ে নেয়।

রুশ ভাইরোলজিস্টরা দুরকম অ্যাডেনোভাইরাস (মামুলি সর্দি-কাশির ভাইরাস, কম সংক্রামক)দিয়ে ভেক্টর ভ্যাকসিন বানিয়েছেন। এডি২৬ (AD26) ও এডি৫ (AD5)—এই দুই রকম অ্যাডেনোভাইরাসের ডিএনএ-র সঙ্গে করোনার স্পাইক প্রোটিনের টুকরো বিশেষভাবে মিশিয়ে ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে। করোনার স্পাইক প্রোটিন প্রাণঘাতী, তাই এই প্রোটিন সরাসরি শরীরে ঢুকলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। ভাইরাল প্রোটিন সংখ্যায় বেড়ে কোষগুলোকে আক্রমণ করবে। তাই অ্যাডেনোভাইরাসের সঙ্গে যদি ভাইরাল প্রোটিন মিশিয়ে দেওয়া হয় তাহলে তার সংক্রামক ক্ষমতা কমে যাবে। আর অ্যাডেনোভাইরাসকেও নিষ্ক্রিয় করে নেওয়া হয় যাতে তারও কোনওরকম খারাপ প্রভাব মানুষের শরীরে না পড়ে। দু’রকম অ্যাডেনোভাইরাস আর করোনার স্পাইক মিলে যে ভ্যাকসিন ডিজাইন করেছেন রুশ ভাইরোলজিস্টরা তার কাজ দুটো—প্রথমত শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করা, দ্বিতীয়ত—অ্যান্টিবডি তৈরি করে রোগ প্রতিরোধ করা। বিজ্ঞানীদের আশা ওমিক্রনের মতো অতি সংক্রামক স্ট্রেনকে নিষ্ক্রিয় করতে স্পুটনিক ভি বিশেষভাবে কার্যকরী হবে।