Home First Lead গায়ানায় বাংলাদেশের দাপুটে জয়

গায়ানায় বাংলাদেশের দাপুটে জয়

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

ওয়ানডে ক্রিকেটে দুর্দান্তভাবে প্রত্যাবর্তন ঘটেছে বাংলাদেশের। টেস্ট ও টি-২০টিতে শোচনীয় পরাজয়ের পর একদিনের ক্রিকেটে প্রবলভাবে ঘুর দাঁড়িয়েছে। আর সেই সুবাদে তারা খুব সহজেই হারিয়ে দিয়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। রোববারের ম্যাচে ৫৫ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটে বিরাট জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে রোববার (১০ জুলাই) সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ১৫০ রান তাড়া করতে নেমে ৯.১ ওভার হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় টাইগাররা। ৩১.৫ ওভার খরচে ৪ উইকেট হারিয়ে তামিম বাহিনীর সংগ্রহ করে ১৫১ রান।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৬৯ বল মোকাবিলায় ২টি চারের সাথে তার ব্যাট থেকে এসেছে একটি ছক্কার মার। এছাড়া ২৭ বল মোকাবিলায় সমান এক চার ও ছক্কার মারে ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন নুরুল হাসান সোহান।

ক্যারিবীয় বোলারদের পক্ষে একটি করে উইকেট শিকার করেছেন আকিল হোসেন, গুদাকেশ মতি ও নিকোলাস পুরান।

অবশ্য শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে আকিল হোসাইনের শর্ট বল ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়েছিলেন লিটন দাস। কিন্তু বল মিস করলে এলবিডব্লিউর আবেদন করে উইন্ডিজ। আম্পায়ার জো উইলসন দীর্ঘক্ষণ সময় নিয়ে আঙুল তোলেন। লিটন রিভিউ নেন। দেখা যায় আম্পায়ার্স কলে আউট হন তিনি। আম্পায়ার নট আউট দিলে টিকে যেতে পারতেন। সাজঘরে ফেরার পথে নিজের আউট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন লিটন।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে দলের হাল ধরেন তামিম। ব্যাট হাতে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন এই বাঁহাতি। তবে ইনিংসের অষ্টম ওভারে ব্যক্তিগত ৩৩ রানে আউট হন তিনি। অফ সাইডে বল পাঠিয়ে শান্ত এক রান নিতে চেয়েছিলেন। তামিম সেই ডাকে সাড়া দেন। কিন্তু অ্যান্ডারসন ফিলিপের সরাসরি থ্রো তাকে বাঁচাতে পারেনি। ২৫ বলে ৩৩ রানের কুইক ফায়ার ইনিংস খেলেন তামিম। যেখানে ৪টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকান।

তামিমের আউটের পর নতুন ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে দলের হাল ধরেন শান্ত। তৃতীয় উইকেটে এই পার্টনারশিপ থেকে আসে ৪৯ রান। শান্ত ৪৬ বলে ৩৭ রানে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। পরে অবশ্য পুরানের স্পিনে বোল্ড হন মাহমুদউল্লাহ। তবে নো বলের কল্যাণে বেঁচে না তিনি। মাহমুদউল্লাহ বাঁচলেও বাঁচতে পারেননি আফিফ হোসেন। পুরানের শিকার ১৭ বলে ৯ রান করে।

১১১ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর দলকে আর কোনো বিপদে পড়তে দেননি দুই ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ আর নুরুল হাসান সোহান। মন্থর উইকেটের চাপ জয় করে দলকে এনে দেন ৬ উইকেটের বড় জয়। মাহমুদউল্লাহ ৬৯ বলে ২টি চার ও ১টি ছয়ের মারে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন। ২৭ বলে ২০ রান করেন সোহান।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি উইন্ডিজের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার শাই হোপ। ডানহাতি ব্যাটসম্যান খুলতে পারেননি রানের খাতা। দ্বিতীয় পাওয়ার প্লের শুরুতে আরেক ইনফর্ম ওপেনার কাইল মায়ার্সকে ফেরান মিরাজ। তার অ্যাঙ্গেল ডেলিভারি পিচ করে হালকা বাঁক খেয়ে স্ট্যাম্পে আঘাত করে। ২৭ বলে ১০ রান করে ফেরেন মায়ার্স।

৩২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ইনিংসের ২১তম ওভারে জোড়া আঘাতে শামার ব্রুকস ও ব্র‍্যান্ডন কিংকে আউট করেন শরিফুল। কিং ৮ রান করেন, ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৩ রান আসে ব্রুকসের ব্যাট থেকে। সুবিধা করতে পারেননি অধিনায়ক নিকোলাস পুরান আর হার্ডহিটার রভম্যান পাওয়েল। দুইজনকেই ফেরান মিরাজ। পুরান করেন ১৮ রান, পাওয়েল লেগবিফোরের ফাঁদে পড়েন ৯ রান করে।

এরপর ৩ রানে থাকা আকিল হোসাইন রান আউটে কাটা পড়লে একশর কোটা ছোঁয়ার আগেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিক শিবির। পরে রোমারিও শেইফার্ডের ১৫ রানের সঙ্গে সিলস আর ফিলিপের ৩৯ রানে শেষ উইকেট জুটিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রানের সংগ্রহ পায় ক্যারিবীয়রা। যেখানে ফিলিপ ২১ আর সিলস ১৬ রান করেন। বাংলাদেশ দল অবশ্য আরো আগেই আটকাতে পারতো প্রতিপক্ষকে। একাধিক ক্যাচ ছেড়েছেন সফরকারী ফিল্ডাররা।