Home খেলাধুলা ওয়েস্ট ইন্ডিজে ওয়ানডে সিরিজ জিতল তামিমরা

ওয়েস্ট ইন্ডিজে ওয়ানডে সিরিজ জিতল তামিমরা

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারের পর যেন জ্বলে উঠেছে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টাইগারদের সামনে দাঁড়াতেই পারলো না স্বাগতিকরা। ফলে ৯ উইকেট ও ১৭৬ বল হাতে রেখেই দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগাররা।

এ নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা ১০টি ওয়ানডে ম্যাচে জয় পেল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। সেই সাথে ওয়ানডে ফরম্যাটে শেষ পাঁচ সিরিজের সবকয়টি জিতলো বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৫ সালে টানা পাঁচ সিরিজ জেতার কীর্তি দেখিয়েছিল টাইগাররা। আর ২০১৪-১৫ মৌসুমে জিতেছিল টানা ছয় সিরিজ।

বুধবার (১৩ জুলাই) গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশি বোলাররা অর্ধেক কাজ সেরে রেখেছিলেন। তাই মাত্র ১০৯ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়ায় ক্যারিবীয় দুই বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেন আর গোদাকেশ মোতিকে সামলাতে তামিম ইকবালের সঙ্গে লিটন দাসের বদলে ওপেনিংয়ে নামেন আরেক বাঁহাতি নাজমুল হোসেন শান্ত।

এই দুই ব্যাটার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের কোনো সুযোগই দিচ্ছিলেন না ইনিংসে। তবে দলীয় ৪৮ রানে ভেঙে যায় তামিম-শান্তর জুটি। ১৩তম ওভারে মোতিকে কাউ কর্নার দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ হন শান্ত। এই বাঁহাতি ৩৬ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২০ রান করেন।

তবে ক্যারিবীয় বোলারদের আর কোনো সুযোগ দেননি তামিম-লিটন। দ্বিতীয় উইকেটে ৫১ বলে ৬৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন তারা।

অধিনায়ক তামিম ক্যারিয়ারের ৫৩তম হাফসেঞ্চুরি তুলে ৬২ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন। ২৭ বলে ৬ চারে ঝড়ো ৩২ করেন লিটন।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে কোনো উইকেট হারাতে দেননি দুই ওপেনার শাই হোপ আর কাইল মায়ার্স। এ সময় ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে স্কোর বোর্ডে ২৬ রান তোলে তারা। যদিও একাধিক সুযোগ মিসের আক্ষেপে পুড়তে হয় সফরকারীদের। সেই আক্ষেপে প্রলেপ পড়ে ১১তম ওভারে। শুরুতে সাফল্যে এনে দেন মোসাদ্দেক। একটু টেনে দেওয়া বল আগেভাগে ব্যাট চালিয়ে মিস করে বোল্ড হন ১৭ রান করা মায়ার্স।

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইন্ডিজের উইকেট তুলে নেন টাইগার বোলাররা। এবার দৃশ্যপটে নাসুম আহমেদ। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেও উইকেট পাননি এই বাঁহাতি স্পিনার। আজ সেই আক্ষেপে ঘোচালেন শুরুতে শামার ব্রুকসকে বোল্ড করে। বাঁহাতি স্পিনারের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে ৫ রানে ফেরেন ব্রুকস।

ইনিংসের ১৮তম ওভারে জোড়া শিকার নাসুমের। আউট করেন ওপেনার হোপ আর অধিনায়ক নিকোলাস পুরানকে। নাসুমকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিড উইকেটে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দেন ডানহাতি হোপ। ফেরেন ৪৫ বলে ১৮ রানে। ওই ওভারের শেষ বলে পুরান রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন। এদিন রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
ক্রিজে এসে জ্বলে ওঠার আগেই আউট হন হার্ডহিটার রভম্যান পাওয়েল। এলোমেলো শটে উইকেট উপহার দিয়ে যান তিনি। শরিফুল ইসলামের লেন্থ বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ দেন রভম্যান। ১৯ বলে ১৩ রান করে সাজঘরে পথ ধরেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
২৬ ওভারে ৬৯ রানে ৫ উইকেট হারানো দলটিকে আরো বিপর্যয়ের মুখে ফেলেন মিরাজ। তিন ওভারের ব্যবধানে একে একে ফেরান ব্রেন্ডন কিং (১১), শেফার্ড (৩) ও আলজারি জোসেফকে (০)। মাঝে ২ রান করে আউটে কাটা পড়েন আকিল হোসাইন। এতে ৮৬ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে একশর আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে উইন্ডিজ। তবে শেষ উইকেটে কিমো পল আর গুদাকেশ মটির ২২ রানের পার্টনারশিপে ১০৮ রানে থামে ক্যারিবীয়দের ইনিংস।

ইনিংস সর্বোচ্চ ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন পল। বাংলাদেশের পক্ষে মিরাজ চারটি আর নাসুম নেন তিনটি উইকেট।