বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
কক্সবাজার: ঢাকা-কক্সবাজার পথে অক্টোবরের মধ্যে রেল যোগাযোগ শূরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এই প্রকল্পের ৮০ ভাগ কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। খবর প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
দোহাজারি থেকে কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটার রেলপথে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাঁও, রামু, কক্সবাজার সদরসহ স্টেশন আটটি। সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি বড় সেতু। রেলপথে তৈরি হয়েছে ৪৩টি ছোট সেতু, ২০১টি কালভার্ট ও ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং। সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া এলাকায় তৈরি হচ্ছে একটি ফ্লাইওভার, রামু ও কক্সবাজার এলাকায় দুটি হাইওয়ে ক্রসিং। হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর চলাচলে ৫০ মিটারের একটি ওভারপাস ও তিনটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে।
কক্সবাজার সদর থেকে ৭ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরে ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজীপাড়া এলাকায় ২৯ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন আইকনিক রেলস্টেশন। স্টেশনটিকে সৈকতের ঝিনুকের আদলে তৈরি করা হচ্ছে। স্টেশন ভবনটির আয়তন ১ লাখ ৮২ হাজার বর্গফুট। ছয়তলা ভবনটির বিভিন্ন অংশে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলমান আছে। নির্মাণাধীন আইকনিক ভবন ঘেঁষে ৬৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ মিটার প্রস্থের তিনটি প্ল্যাটফরম তৈরি হচ্ছে। এর পাশেই গড়ে উঠছে রেলওয়ের আবাসিক এলাকা। সেখানে আটটি ভবনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। স্টেশনটিতে আবাসিক হোটেলের পাশাপাশি ক্যান্টিন, লকার, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। পর্যটকরা স্টেশনের লকারে লাগেজ রেখে সারা দিন সমুদ্রসৈকতে বা দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে পারবেন। এই স্টেশন দিয়ে দিনে ৪৬ হাজার মানুষ আসা যাওয়া করতে পারবেন।
প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমানের জানান, ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের ইতিমধ্যে ৫০ কিলোমিটারের বেশি দৃশ্যমান। বেশির ভাগ ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ শেষ হয়েছে। বাকিগুলো আগামী কয়েক মাসেই শেষ হবে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ আছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। তবে, আমরা চেষ্টা করছি ২০২৩ সালের জুন-অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ করতে। একই সঙ্গে রেলস্টেশনগুলোর নির্মাণকাজও চলমান আছে।
২০১৮ সালে ডুয়েল গেজ ও সিঙ্গেল ট্র্যাক রেললাইন প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রামু পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে প্রথমে ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করা হয়। তখন ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার।