- পরিশোধিত অর্থ ফেরত দাবি বিজিএমইএ’র
- সার্কুলারে ‘মর্মাহত’ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে চলমান সাধারণ ছুটির সময়ে কন্টেইনারে কোনরূপ ডেমারেজ ও ডিটেনশন চার্জ আরোপ না করার সুপারিশ করেছে সমুদ্র পরিবহণ অধিদপ্তর।
ইতিমধ্যে এখাতে পরিশোধিত চার্জ ফেরত প্রদান এবং আর কোন ডেমারেজ, ডিটেনশন চার্জ আদায় না করার আহ্বান জানিয়েছে বিজিএমইএ।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন বলেছে যে ঐ সুপারিশ তাদেরকে ‘মর্মাহত’ করেছে।
আমদানি-রপ্তানি শিপমেন্টে ২৫ মার্চ থেকে ৫ মে পর্যন্ত সময়ে কন্টেইনার ডিটেনশন, ডেমারেজ চার্জ আরোপ না করার সুপারিশ করে সার্কুলার জারি করেছেন সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। বুধবার সার্কুলারটি জারি হয়েছে। এ সময়ে অতিরিক্ত অন্য কোন রকমের চার্জ আদায় থেকেও বিরত থাকার সুপারিশ করা হয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি, সাধারণ ছুটি ইত্যাদি প্রেক্ষাপট বিবেচনায় জারি হয়েছে সার্কুলারটি।
সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম আকতার হোসেন বিজনেসটুডে২৪ কে জানান, শিপিং এজেন্টদের দৈনিক চার্জ প্রতি কন্টেইনারে ৮৮ মার্কিন ডলার। কোন কোন ক্ষেত্রে পণ্য মূল্যের চেয়ে বেশি হয়েছে শিপিং এজেন্টদের চার্জ। আমদানিকারকরা এই চার্জের বোঝা নিয়ে শংকিত। কেবল তা নয়, আরও বিভিন্ন নামে চার্জ আদায় করে শিপিং এজেন্টরা। বিষয়টি নিয়ে শিপিং এজেন্টদের সাথে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের আলোচনা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ সমূদয় স্টোররেন্ট মওকুফ করেছে। শিপিং এজেন্টরাও অনুরূপ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাদের প্রিন্সিপ্যালকে অবহিত করতে পারে যে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সময় মত কন্টেইনার খালি করা সম্ভব হচ্ছে না আমদানিকারকদের পক্ষে।
আকতার হোসেন জানান, যথাসময়ে তারা ডকুমেন্ট পাঠাতে পারছে না। কাস্টম হাউস এবং বন্দর পুরোদমে চালু থাকলেও শিপিং এজেন্টদের অফিস খোলা থাকে আংশিক সময়। সিএন্ডএফ এজেন্টরা ডিও’র জন্য গিয়ে ফেরত আসছে। যে কারণে বন্দরে বিরাজ করছে জট এবং আমদনিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের সার্কুলারের প্রেক্ষিতে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র প্রথম সহ-সভাপতি মো. আবদুস সালাম বৃহস্পতিবার বন্দর চেয়ারম্যান বরাবরে দেয়া এক পত্রে ইতিমধ্যে পরিশোধিত ডিটেনশন, ডেমারেজ চার্জ ফেরত দাবি করেছেন। এ ব্যাপারে শিপিং এজেন্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়ার অনুরোধ জানানো হয় পত্রে।
উল্লেখ করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে শিপিং এজেন্টদের ডেমারেজ চার্জ প্রদান করে চালান খালাস করতে হয়েছে। সেই চার্জ ফেরত দেয়া এবং ডেমারেজ ও ডিটেনশন চার্জ আদায় না করার নির্দেশনা দেয়ার আহ্বান জানান মো. আবদুস সালাম।
শিপিং অধিদপ্তরের সার্কুলারের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন বৃহস্পতিবার এক পত্রে জানিয়ে দেন যে কন্টেইনারে ডিটেনশন চার্জ আরোপ ও মওকুফের বিষয়টি তাদের বিদেশি প্রিন্সিপ্যালের এখতিয়ারে। তাছাড়া, কন্টেইনার পণ্য গ্রহণের জন্য ১৪ দিন থেকে ২১ পর্যন্ত ফ্রি সময় থাকে। এই সময়ের মধ্যে ডিটেনশন চার্জ আরোপযোগ্য নয়। বর্তমানে জাহাজ এসে ১৫/১৬ দিন পর্যন্ত বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ থেকে কোটি কোটি টাকা ডেমারেজ গুণতে হচ্ছে। এ অবস্থায় শিপিং এজেন্টদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সংকটের। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে বন্দরে বিভিন্ন চার্জ মওকুফ বা হ্রাসের জন্য। কেবল তা বিবেচনা করা হলে ডিটেনশন চার্জ মওকুফ ও হ্রাসের সুযোগ থাকবে বলে পত্রে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
এসোসিয়েশন চেয়ারম্যান আহসানুল হক চৌধুরী জানান যে মুম্বাই বন্দরের অনুসরণে আলোচ্য সার্কুলারটি হয়েছে। কিন্তু মুম্বাইর সাথে চট্টগ্রামের তুলনা করা যায় না। সেখানে বার্থ পাওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ থাকতে হয় না, সরাসরি ঢুকে যায় জাহাজ। কোন জট নেই। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জাহাজ কন্টেইনার খালাস করে রপ্তানি নিযে ফিরে যেতে পারছে। তাই সেখানে সম্ভব ডিটেনশন, ডেমারেজ চার্জ ছাড় দেয়া।