Home First Lead কন্টেইনার অফডকে যাচ্ছে, জোরদারের অনুরোধ বন্দরের

কন্টেইনার অফডকে যাচ্ছে, জোরদারের অনুরোধ বন্দরের

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: আমদানি করা সব পণ্য বেসরকারি অফডকে নেয়ার ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর )’র অনুমোদনের পর স্থানান্তর শুরু হয়েছে। ট্রেইলার ও অপারেটর বাড়িয়ে তা জোরদার করতে বলেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বেসরকারি মালিকানাধীন ১৭ টি অফডকে কন্টেইনার রাখার সক্ষমতা রয়েছে ৭৭ হাজার ৮০০ টিইউস। এর বিপরীতে রয়েছে ৫৩ হাজার ৫৩ টিইউস। অর্থাৎ ধারণক্ষমতা খালি রয়েছে ২৪,৪৭৮ টিইউসের (২৬ এপ্রিলের পরিসংখ্যান)।অপরদিকে, বন্দরে ৪৮,৬৪৬ টিইউস। বন্দরে কন্টেইনার রাখার যে ক্ষমতা তা পরিপূর্ণ। কোথাও জায়গা নেই। তাই জাহাজ থেকে কন্টেইনার খালাস ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে।অধিক সময় লাগছে কন্টেইনার খালাসে তাই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ফিরে যেতে পারছে না জাহাজ।আর ভিতরে আসার জন্য বহির্নোঙরে জাহাজকে দু’সপ্তাহর বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

নির্ধারিত কিছু আমদানি পণ্য অফডকে নিয়ে সেখান থেকে ডেলিভারির সুযোগ ছিল।বন্দরে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে কন্টেইনার জটের কারণে তা সামাল দিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সব পণ্য অফডকে নিয়ে সেখান থেকে ডেলিভারি নেয়ার অনুমোদন দিয়েছে সাময়িকভাবে। উদ্দেশ্য, বন্দর ইয়ার্ডে জায়গা খালি করে জাহাজ থেকে দ্রুত কন্টেইনার খালাস।

অফডকসমূহও কন্টেইনার নেয়া শুরু করেছে। কিন্তু এখনও বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা অনুসারে নয়। বন্দরের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বন্দর থেকে দেয়া এসাইনমেন্ট অনুসারে কন্টেইনার নিয়ে যেতে পারছে না অফডকসমূহ। কয়েকটি বাদে অন্যদের পর্যাপ্ত ট্রেইলার এবং অপারেটর না থাকায় সম্ভব হচ্ছে না এসাইনমেন্ট অনুসারে দ্রুত কন্টেইনার নিয়ে যাওয়া।প্রয়োজনীয় সংখ্যক অপারেটর এবং ট্রেইলারের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য অফডকসমূহকে সোমবার চিঠি দেয়া হয়েছে।

নুরুল কাইয়ুম খান

বেসরকারি অফডকসমূহের সংগঠন বিকডা’র চেয়ারম্যান নুরুল কাইয়ূম খান-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধিকে এ প্রসঙ্গে জানান যে অফডকসমূহ ইয়ার্ড থেকে কন্টেইনার বেশ সন্তোষজনকভাবে সরিয়ে নিচ্ছে। ২দিনে নেয়া হয়েছে ৪ হাজার টিইউসের অধিক।অর্থাৎ ৩ জাহাজে পরিবাহিত কন্টেইনারের সমান সংখ্যক নেয়া হয়েছে। তবে, বন্দরের এসাইনমেন্ট অনুসারে নেয়া সব ডিপোর পক্ষে সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করে বলেন, ট্রাফিক জ্যাম, ডেলিভারিতে সমস্যা, কাস্টমস-এর স্ক্যানারে সময়ক্ষেপণ ইত্যাদি এর অন্যতম কারণ।

বিকডা চেয়ারম্যান জানান, বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ গতিশীল করতে প্রয়োজন অফডক থেকে কম সময়ের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি নিয়ে যাওয়া। আমদানিকারকরা যদি তা না করেন তাহলে কয়েকদিনের মধ্যে ডিপোসমূহে কোন জায়গা থাকবে না। আর তখন বন্দর থেকে আমদানি পণ্যের কন্টেইনার নিয়ে আসা যাবে না। বন্দর আবারও একই সংকটে পড়বে।

জানান, আগামী ৫দিনের মধ্যে সব অফডক ভরে যাবে কন্টেইনারে। আমদানিকারকদের এরমধ্যে তাদের পণ্য ডেলিভারি নেয়া ত্বরান্বিত করতে হবে। নতুবা কোন সুফল মিলবে না। এক্ষেত্রে ঋণপত্র খোলা হয়েছে যেসব ব্যাংকে, সেসব ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বন্দরে বর্তমানে যে কন্টেইনার পড়ে আছে সেগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামালভর্তি প্রায় ১৫ হাজার টিইউস। দু’দিনে ডেলিভারি নেয়া হয়েছে মাত্র ৩৫০ টিইউসের মত।রবিবার বন্দরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চিটগাং চেম্বার ও বিজিএমইএ পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ। তিনি সেখানে জানান, কিছু কিছু তৈরি পোশাক কারখানা খুলেছে। অনুরোধ জানানো হবে যাতে বন্দর বা ডিপো থেকে কাঁচামাল খালাস করে নিয়ে যায়।

বন্দর কর্তৃপক্ষও বিভিন্ন আমদানিকারককে পণ্য ডেলিভারি নিয়ে অপারেশনাল কার্যক্রম সচল রাখতে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।