Home আন্তর্জাতিক করোনা সেবা : ব্রিটেনের রানির স্বীকৃতি পেলেন শতবর্ষী দবিরুল

করোনা সেবা : ব্রিটেনের রানির স্বীকৃতি পেলেন শতবর্ষী দবিরুল

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য অর্থ সংগ্রহে তহবিল করে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শতবর্ষী ব্রিটিশ নাগরিক দবিরুল ইসলাম চৌধুরী। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন টম মুর তার বাড়ির বাগানে পায়ে হেঁটে স্বাস্থ্য-কর্মীদের জন্য যেভাবে প্রায় সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড চাঁদা তুলেছিলেন তা দেখে উৎসাহিত হয়েছিলেন দবিরুল চৌধুরী।

২৬ এপ্রিল থেকে শুরু হয় তার এই কার্যক্রম শুরু হয়। লন্ডনের উপকণ্ঠে নিজে বাড়ির বাগানে প্রতিদিন ১০০ বার করে ৮০ মিটার পথ হাঁটেন। রোজার মাসে পায়ে হেঁটে তহবিলের জন্য প্রায় সাড়ে চার লাখ পাউন্ড চাঁদা তোলেন। এর মধ্যে এক লাখ ১৬ হাজার পাউন্ড দেওয়া হয় স্বাস্থ্য বিভাগ এনএইচএস-কে। বাকি অর্থ ৫২টি দেশের ৩০টি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করা হয়।

এ অসাধারণ কাজের জন্য ব্রিটেনের রানির বিশেষ সম্মানে ভূষিত হন দাবিরুল। রানির পদক পাওয়ার পর তিনি যেসব দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত সেগুলোর প্রতি মানুষের সমর্থন আরও বাড়বে বলে তিনি আশা করেন।

ইতিমধ্যে দবিরুল ইসলামের এই উদ্যোগ নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে, যুক্তরাজ্যে নিজের বাগানের চারপাশে একশো পাক হেঁটে ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সেবার জন্য ৩২ মিলিয়ন পাউন্ড তুলেন শতবর্ষী সাবেক সৈনিক টম মুর।

দবিরুল ইসলাম চৌধুরীর জন্ম ১৯২০ সালে সিলেটের দিরাইতে। ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে উচ্চশিক্ষার আশায় ১৯৫৭ সালে তিনি বিলেতের পথে পাড়ি জমান। এরপর সেন্ট অলবান্স শহরে বসবাস করেন এবং সেখানে একজন কমিউনিটি লিডার হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। উনিশশো একাত্তর সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের সময়েও অর্থ সাহায্য সংগ্রহ করেছিলেন।

দবিরুল ইসলাম চৌধুরীর এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বিরোধী দল লেবার পার্টির প্রধান স্যার কিয়ার স্টার্মার বলেছেন, “আমাদের সবার কাছে তিনি প্রেরণার এক উৎস।”

বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে দবিরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তিনি ব্রিটেনের বাঙালি সমাজ, বয়স্ক সমাজ ও অভিবাসী সমাজের পক্ষ থেকে এই ওবিই পদক গ্রহণ করছেন।

জানান, সপ্তাহ দু’য়েক আগে রানির দপ্তর থেকে ওবিই পদক প্রাপ্তির চিঠি পেয়ে তিনি বেশ অবাকই হয়েছিলেন।

“আমরা যখন কোন একটা ভালো কাজ করি তখন বিশেষ কোন প্রাপ্তির কথা মাথায় রাখি না,” বলছিলেন তিনি, “তবু এই স্বীকৃতির জন্য আমি খুবই আনন্দিত।”

আর এই পদক তার জীবনের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ কোন পরিবর্তন আনবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে তার কাজ যদি অন্য কাউকে উৎসাহিত করে তবেই তিনি খুশি হবেন বলে জানালেন।