কুড়িগ্রাম থেকে নয়ন দাস: চিলমারীতে আশংকাজনক হারে করোনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চরাঞ্চলের তিনটি ইউনিয়নে ঘরে ঘরে জ্বর ছড়িয়ে পরেছে। চরাঞ্চলে এন্টিজেন্ট টেষ্টের কোন সুযোগ সুবিধা না থাকায় করোনা সনাক্ত করা হচ্ছে না । তবে ইতোমধ্যে ১ জনের শরীরের নমুনা পরীক্ষা করে তার শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। এদিকে গত ২ সপ্তাহে উপজেলায় করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে ৫৩ জন এবং মৃত্যু বরণ করেছে ১ জন।
চিলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানাগেছে ২১ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ১৭৫ জনের শরীরে নমুনা পরীক্ষা করে ৫৩ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ সনাক্ত করা হয়েছে। সোমবার ২১ জনের শরীরের নমুনা টেষ্ট করে ৯ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। গত রবিবার ২২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া গিয়েছিল। এই সকল আক্রান্ত ব্যক্তিরা কেউ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি না হয়ে নিজ নিজ বাড়িতে হোম কোয়রেন্টাইনে চলে যাওয়ায় করোনা ছড়িয়ে পড়ার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
এদিকে চিলমারী অগ্রণী ব্যাংক ব্যবস্থাপক পবিত্র বিশ্বাস এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, তার শরীরে করোনা পজেটিভ সনাক্ত হবার পর তিনি ১৬ দিন নিজ বাড়িতে হোমকোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে চিলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পক্ষ থেকে কেউ তার বাসায় গিয়ে চিকিৎসা তো দেয়নি ,এমনকি মোবাইলে কোন খোঁজ- খবর পর্যন্ত নেয়নি।
চিলমারীর চরাঞ্চলীয় নয়ারহাট, অষ্টমীরচর ও চিলমারী ইউনিয়নে ঘরে ঘরে জ্বর সহ করোনার বিভিন্ন লক্ষণ ছড়িয়ে পরেছে। এ ব্যাপারে অষ্টমীরচর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবু তালেব এ প্রতিনিধিকে মুঠোফোনে , আশংকা প্রকাশ করে বলেন চরাঞ্চলে এন্টিজেন্ট টেষ্টের কোন ব্যবস্থা না থাকায় বুঝা যাচ্ছেনা সেখানে কি পরিমান মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। একজন গ্রাম্য ডাক্তার তার শরীরের নমুনা পরীক্ষা করলে তার শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়। চেয়ারম্যানের ধারনা ইতোমধ্যে অনেক মানুষই হয়তোবা করোনা আক্রান্ত হয়ে পরতে পারে। তিনি বলেন, চরে গরীব লোক বসবাস করে। এখানে কোন হাসপাতাল নেই। করোনা টেষ্ট করতে হলে এবং আক্রান্তদের চিকিৎসা নিতে হলে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে চিলমারী হাসপাতালে যেতে হবে। সেই আর্থিক সাবলম্বীতা তাদের নেই। এ ব্যাপারে চরাঞ্চলের ইউনিয়ন পরিষদ গুলিতে কিংবা স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে এন্টিজেন্ট টেষ্টের ব্যবস্থাসহ চিকিৎসক নিযুক্ত করার দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে চিলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ আমিনুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হাসপাতালে মোট ৬টি বেড রয়েছে। কেউ হাসপাতালে ভর্তি হতে চায় না। তারা বাড়িতে হোমকোয়ারেন্টাইনে থাকতে আগ্রহী হওয়ায় তাদেরকে বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। তাদের কোন চিকিৎসা সেবা প্রদান কিংবা খোঁজ খবর না নেয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলে এ ব্যাপারে যাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে হয়তো সেখানে কোন ত্রুটি হচ্ছে। তিনি নিজেই খোঁজ খবর রাখবেন বলে জানান। চরাঞ্চলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন আমার পর্যাপ্ত ম্যানপাওয়ার নেই। সুতরাং চরে গিয়ে টেষ্ট করানো এ মুহূর্তে সম্ভব নয়।