Home First Lead কলকাতা থেকে ট্রানজিট পণ্য আনুষ্ঠানিক শিপমেন্ট

কলকাতা থেকে ট্রানজিট পণ্য আনুষ্ঠানিক শিপমেন্ট

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

কলকাতা: বাংলাদেশের সাথে ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তির আওতায় পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহন শুরু হলো। পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের জন্য ৪ কন্টেইনার পণ্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শিপমেন্টের মধ্য দিয়ে এর সূচনা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় শিপিং প্রতিমন্ত্রী মানসুখ মান্দাভিয়া উদ্বোধন করছেন

কেন্দ্রীয় শিপিং প্রতিমন্ত্রী মানসুখ মান্দাভিয়া আজ বৃহস্পতিবার ভার্সুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধন ঘোষণা করেন।  এ সময় তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর পণ্য পরিবহনে নতুন রুট চালু হলো। এটা হবে বেশ সাশ্রয়ী। সময় এবং খরচ দু’টোই কমে যাবে। আর আগামীতে দু’দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরমুখী বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি সেঁজুতি’তে ট্রানজিটের প্রথম চালানে ৪ কন্টেইনার পণ্য তুলে দেয়া হয়েছে। দু’কন্টেইনারে রয়েছে টাটা স্টিলের উৎপাদিত টিএমটি স্টিল বার। অপর দু’টিতে ইটিসি অ্যাগ্রো প্রসেসিংয়ের মসুর। ‘এমভি সেঁজুতি’ এখানে তত্ত্বাবধান করে সি জে-ডার্সেল এন্ড প্যানন শিপিং। শ্যামাপ্রসাদের আনু্ষ্ঠানিকতাশেষে সেঁজুতি গেছে হলদিয়ায়।

প্যানন শিপিং জানিয়েছে, আগামী সোমবার বা মঙ্গলবার নাগাদ জাহাজটি পৌঁছবে চট্টগ্রাম। সেখানে জাহাজ থেকে কন্টেইনার সরাসরি ট্রেইলারে চলে যাবে পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরায়। টিএমটি স্টিলের চালানটি ত্রিপুরার। আর ডালের চালান যাবে আসামের করিমগঞ্জে।

‘এমভি সেঁজুতি’ কোস্টাল শিপ। অনেকদিন ধরে চলাচল করছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে। সেটাই এবার ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্য নিয়ে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে শ্যামাপ্রসাদ বন্দর কর্তৃপক্ষ বর্ণাঢ়্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে সড়ক পথে ট্রাকে পন্য পৌঁছতে সময় লাগে ৭ দিন। নতুন রুটে শ্যামাপ্রসাদ থেকে ৩৬ ঘণ্টা থেকে ৪৮ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম। সেখান থেকে দিনে দিনে আগরতলা সীমান্ত দিয়ে ত্রিপুরা।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট কন্টেইনার/কার্গো নেয়া হবে আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে। পরবর্তীতে রামগড়-সাব্রুমে ফেনি নদীর ওপর নির্মিয়মান মৈত্রী সেতু-১ দিয়ে পারাপার হবে ট্রান্সশিপমন্ট পণ্য। ৭০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে সেতুটির। মূল সেতু থেকে ২৪০ মিটার দীর্ঘ এপ্রোচ রোডটি রামগড়- বারৈয়ারহাট(চট্টগ্রাম) মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত হবে। ভারত ইতিমধ্যে ঐ এপ্রোচ রোডের জন্য অধিগ্রহণ করা জায়গাটিতে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। চালু হবে স্থল বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক শ’ কিলোমিটারের মধ্যে সেতুটি। অদূরে গড়ে তোলা হচ্ছে স্পেশাল ইকোনোমিক জোন।

চট্টগ্রাম-কলকাতা সমুদ্রপথে দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার।আর চট্টগ্রাম থেকে আগরতলা ২০০ কিলোমিটার।

ভারত ইতিমধ্যে আশুগঞ্জ নৌ বন্দরকে ব্যবহার শুরু করেছে। তবে, সেখানে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করার মত আধুনিক সুবিধা নেই। আশুগঞ্জকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন করার কাজ চলছে ভারতের আর্থিক সহায়তায়। কাজ শেষ হতে প্রায় ৫ বছর লেগে যেতে পারে।

বাংলাদেশ-ভারত ‍দু’দেশের সরকার প্রধান প্রায় ৯ বছর আগে বহুমাত্রিক ট্রানজিট (নৌ,সড়ক ও রেল)চালুর বিষয়ে একমত হয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে দু’দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক হয়।  ২০১৬ সালের জুনে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে নৌ-ট্রানজিটের আওতায় পণ্য পরিবহন শুরু করে ভারত। তবে, এ ব্যবস্থা তেমন সক্রিয় নয়।