Home Second Lead কাঁচা ফুলের সরবরাহ কমেছে, বেড়েছে দাম

কাঁচা ফুলের সরবরাহ কমেছে, বেড়েছে দাম

চেরাগী থেকে তোলা ছবি: জাহাঙ্গীর আলম।

সুমন চৌধুরী

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: বাজারে কাঁচা ফুলের বিক্রি কমেছে। চাহিদা বেড়েছে প্লাস্টিক ফুলের। করোনা মহামারীর আগে যে পরিমান ফুল পাইকারি বাজারে আসত এখন আসছে না। ফলে বেড়েছে দামও।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, নগরীর ৪০ শতাংশ ফুলের যোগান আসে চট্টগ্রামের চাষীদের কাছ থেকে। বাকী ৪০ শতাংশ ফুল আসে ঢাকা ও যশোরের চাষীদের কাছ থেকে। যশোর থেকে আসে উন্নত জাতের রজনীগন্ধা, গাঁদা ও বিভিন্ন রংয়ের দৃষ্টিনন্দন গ্লাডিওলাস। চট্টগ্রামের চাষীরা সরবরাহ করে থাকেন নানা রংয়ের গোলাপ, বিভিন্ন বর্ণের গ্লাডিওলাস ফুল এবং জারবারা বা জিনিয়া ফুল ইত্যাদি। কিন্ত করোনা মহামারীর পর তুলনামূলক হারে সরবরাহ কমেছে। কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে।

জানা গেছে, চেরাগী পাহাড় ও মোমিন রোড এলাকাতে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৬০টি ফুলের দোকান রয়েছে। এখান থেকে মিরসরাই, সন্দ্বীপ, সাতকানিয়ায় পাইকারিতে ফুল সরবরাহ করা হয়। তবে বর্তমানে ফুলের সরবরাহ কমেছে। করোনা মহামারীর আগে হাটহাজারী ও চকরিয়া থেকে গোলাপ আসত দুই লাখেরও বেশি। বর্তমানে আসছে ৭০ হাজার। যশোর থেকে গাঁদা আসত ২৫-৩০ লাখ। আসছে ২ লাখ। রজনীগন্ধা ৫০ হাজারের জায়গায় আসছে ৩ হাজার, গাজরা ৩২ হাজার , বেলি ফুল ৩ হাজার ও জিনিয়া ফুল আসছে ৫ হাজারের মত।

সরেজমিনে মোমিন রোডে ফুলের দোকানগুলোতে দেখা যায়, দোকানের সামনের অংশে ফুলের মজুত কম। তেমন ক্রেতাও নেই। দোকানিরা মেতেছে খোশগল্পে। আজকে গোলাপের শত ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রজনীগন্ধার প্রতি স্টিক ১৫ টাকা, গাঁদা ফুলের লহর ৩০ টাকা ও বেলী ফুলের লহরের শত ২৫০ থেকে ৩০০ টাক বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি ব্যবসায়ী স্বপন দাশ বিজনেসটুডে২৪ কে জানান, বর্তমানে ফুল ব্যবসায় লাভ নেই। সকাল থেকে যা বেচাবিক্রি করেছি দোকান খরচ ও কর্মচারীদের বেতন দিতে কষ্ট হবে। লকডাউনের পর সামাজিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান তেমন শুরু হয়নি। আগে প্রতিদিন ৩-৪টা বিয়ের গাড়ি সাজানোর কাজ করতাম। এখন মাসে দুইটা হয় না। তাছাড়া কাঁচা ফুলের চাইতে প্লাস্টিক ফুলের চাহিদা বেড়েছে। বিয়ের গাড়ি সাজানোর ক্ষেত্রেও কাঁচা ফুলের পরিবর্তে প্লাস্টিকের ফুল ও মসারির নেট ব্যবহার হচ্ছে।

হাটহাজারী থেকে ফুল কিনতে আসা ব্যবসায়ী মামুন বলেন, আমি এখান থেকে ফুল কিনে নিয়ে ব্যবসা করি। এখন বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। শীতে ফুলের বেচাকেনা বাড়ে। তাছাড়া প্লাস্টিকের ফুলের চাহিদা আছে। এর সৌন্দর্য অনেক দিন থাকে।

চট্টগ্রাম ফুল ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম বিজনেসটুডে২৪ কে বলেন, করোনার পর থেকে চাষীরা নতুন করে ফুল চাষ শুরু করেছে। সামনে মৌসুম। আশা করছি আগের অবস্থা ফিরে আসবে। তবে প্লাস্টিকের ফুলের স্বয়লাভে দিনের পর দিন কাঁচা ফুলের চাহিদা কমছে। এর কারণে চাষীরাও ফুল চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রায় অনুষ্ঠানে প্লাস্টিকের ফুল দিয়ে স্টেজ সাজানো হয়। ক্লাবগুলো ইভেন্টের উপর চলে। আগে দোকানিরা ফুল নিয়ে গিয়ে সাজাতো। ইভেন্টের কারণে সেটা আর হয় না। আমরা আগেও প্লাস্টিকের ফুল বাজারজাতকরণ বন্ধের দাবি জানিয়ে এসেছি। যে পরিমান প্লাস্টিকের ফুল বাজারে আসছে অচীরে কাঁচা ফুলের অস্তিত্ব হারাবে।