নয়ন দাস
কুড়িগ্রাম: উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ ও তিস্তা নদীর চরে আবারও বিলুপ্ত প্রায় কাউন চাষে ঝুঁকছেন চরবাসি।
উপজেলার বিভিন্ন চরে চলতি মৌসুমে কাউনের ফলন ভালো হওয়ায় সফলতার নতুন স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। একসময় মঙ্গাপীড়িত এ অঞ্চলের অভাবি মানুষজন ভাতের বিকল্প হিসেবে কাউনের চালের ভাত ও পান্তা খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বর্তমানে কাউনের চালের পিঠা, পায়েস ও মলাসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী গ্রামের মানুষের পাশাপাশি শহরের মানুষের সখের খাবারে পরিণত হয়েছে।
উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত বুড়াবুড়ি, সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, হাতিয়া ও তিস্তা নদীর অববাহিকায় থেতরাই, দলদলিয়া, গুনাইগাছ ও বজরা ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক চর ও দ্বীপ চরে কাউন চাষে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে কয়েকটি চরে গিয়ে দেখা যায়, চরগুলোতে যেন সবুজের সমারোহ। ধু-ধু বালু চর গুলো ঘিরে নতুন স্বপ্নে বিভোর চরবাসী। বিস্তীর্ণ চর জুড়ে কাউনের ক্ষেত।
এসময় বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের বিন্দুর চরের কৃষক সাবেক ইউপি সদস্য বিন্দু বলেন, এ বছর আমি দেড় একর জমিতে কাউন চাষ করেছি। ফলনও ভাল হয়েছে। উৎপাদন ব্যয় কম হওয়ায় দিন দিন চরাঞ্চলের চাষিরা দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। কৃষকরা এ বছর বাজারে কাউনের কাঙ্খিত দাম পেলে আগামীতে চরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে কাউন চাষে উদ্বুদ্ধ হবে। কাউন চাষী মিজানুর রহমান, বাবর আলী, আব্দুস সামাদও একই কথা বলেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলে কাউনের আবাদ ২ হাজার ১৩৭ বিঘা ছাড়িয়ে গেছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, প্রতি মণ কাউন বাজারে ২২০০-২৪০০ টাকায় বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে অধিক মুনাফার আশায় চরাঞ্চলের এসব কাউন চাষীরা নতুন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, চরাঞ্চলে এসব অকৃষি জমিতে কম খরচে লাভজনক কাউন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ নিয়মিত এসব কাউন চাষীদের মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছেন।