বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
জয়পুরহাট: দীর্ঘদিন যাবৎ অসহায় ও গরীব প্রকৃতির লোকজনদের মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে
মানবদেহের কিডনি দেশে-বিদেশে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছে এখানকার সংঘবদ্ধ চক্র। দালাল
মোশাররফ হোসেন ও শাহারুল ইসলাম ২০০৯ সালে, মোকাররম ২০০৬ সালে, সাইদুল
ফকির ২০১৬ সালে তাদের কিডনি বিক্রয় করে এবং ফরহাদ হোসেন চপল, সাদ্দাম ও
শাহারুল কিডনি বিক্রয়ের জন্য ভারতে গেলেও তারা ভয় পেয়ে কৌশলে পালিয়ে আসে।
এভাবে তারা কিডনি বিক্রয় চক্রে দালালে পরিনত হয়। এখন সবাই দালাল চক্রের
সক্রিয় সদস্য। ঐ দালাল চক্র এলাকার অসহায় লোকদের প্রলুব্ধ করে ঢাকায় অবস্থায়রত
কাওসার ও ছাত্তারের কাছে পাঠায়।
শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশ লাইন ড্রিলসেডে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ
সুপার মাসুম আহাম্মদ ভূঞা। পুলিশ সুপার জানান, প্রাথমিক অবস্থায় ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ধার অথবা
সুদের উপর দেওয়ার কিছুদিন পরই তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক টাকা ফেরত চান এবং
টাকা ফেরত দিতে না পারলে কিডনি বিক্রয়ের জন্য বাধ্য করে সংঘবদ্ধ দালাল চক্র। তারা
কতিপয় অসাধু ডাক্তারের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেশের
অভ্যন্তরে এবং দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে তাদের কিডনি অপসারণ করায়। দালালরা
মোটাঅংকের টাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরে প্রতারণা করে তাদের হাতে এক
থেকে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে সারা জীবনের মতো অঙ্গহানি করে দেশে পাঠিয়ে দেয়।
অবৈধ ভাবে কিডনি ক্রয়-বিক্রয় চক্রকে ধরার তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
জয়পুরহাটে অবৈধভাবে কিডনি ক্রয়-বিক্রয় চক্রের ৭ জন সদস্যকে গ্রেফতার
করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার দিবাগত রাতে কালাই ও পাঁচবিবি উপজেলার
কয়েকটি গ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃরা হলেন, জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উদয়পুর থল গ্রামের মৃত সিরাজের ছেলে সাহারুল (৩৮), উলিপুর গ্রামের ফরিদুল ইসলামের ছেলে ফরহাদ
হোসেন ওরফে চপল (৩১), জয়পুর বহুতী গ্রামের মৃত মফিজের ছেলে মোশাররফ
হোসেন (৫৪), মৃত মোবারকের ছেলে মোকাররম (৫৪), দুর্গাপুর গ্রামের মৃত
বছির উদ্দিন ফকিরের ছেলে সাইদুল ফকির (৪৫), মাত্রাই ভেরেন্ডি গ্রামের জাহান
আলমের ছেলে শাহারুল ইসলাম (৩৫) ও পাঁচবিবি উপজেলার গোড়না আবাসনের
মৃত ছাত্তারের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (৪০) কে গ্রেফতার করা হয়েছে।