র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে অপরাধে জড়ানোদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। দেশে কিশোর গ্যাংয়ের অস্তিত্ব থাকবে না’।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির আয়োজনে ‘কিশোর অপরাধ বৃদ্ধিতে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার’ শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন তিনি।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সম্প্রাত অপরাধের প্রবণতা বেড়ে গেছে। টিকটকসহ কয়েকটি অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। ক্ষতিকর অ্যাপসগুলো বন্ধ করার বিষয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি পর্যালোচনা করছে।
তিনি বলেন, অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের র্যাব গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসছে। কোনো অপরাধ সংঘটনের পর আসামি ধরা হয়নি, এমন নজির র্যাবে নেই। সব অপরাধের পর আসামি ধরতে র্যাব সদা তৎপর। হেডকোয়ার্টার্স ও ব্যাটালিয়নের মধ্যে কে কার আগে আসামি ধরবে এই নিয়ে প্রতিযোগিতা আছে। বর্তমানে অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।
কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কোনো রাজনৈতিক চাপ আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব ডিজি বলেন, ‘আমি চাপ নিয়ে কাজ করি না। এসব চাপ আমার কাছে আসেও না। বিভিন্ন সময় নানা ধরনের অপরাধ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। পরে আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারণে সেই অপরাধগুলো নিয়ন্ত্রণে আসে। একটা সময় ইভটিজিং বেড়ে গিয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় এখন নিয়ন্ত্রণে। জঙ্গিবাদ এখন নিয়ন্ত্রণে। আইনের বাইরে ও আইনের সংজ্ঞায় যে কেউ অপরাধী হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে র্যাব আগেও কুণ্ঠিত হয়নি, আগামীতেও হবে না।
তিনি বলেন, কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃলা বাহিনীর পাশাপাশি অভিভাবক ও শিক্ষকসহ সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষত সন্তানদের প্রতি বাবা-মায়ের নজরদারী বাড়াতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কিশোরদের সৃজনশীল কাজে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে কিশোর অপরাধ কমানো সম্ভব।
প্রতিযোগিতায় ঢাকার শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজকে পরাজিত করে নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ চ্যাম্পিয়ন হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
বিতর্ক অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে ছিলেন ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক লিটন হায়দার, আব্দুল্লাহ তুহিন, কাওসার সোহেলী, প্রাক্তন বিতার্কিক মেহেদী হাসান তামিম।
বিতর্ক অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন র্যাব-২ এর পরিচালক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম এবং র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে ট্রফি ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়।