Home সারাদেশ কুষ্টিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষিকার শত কোটি টাকার সম্পদ

কুষ্টিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষিকার শত কোটি টাকার সম্পদ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

কুষ্টিয়া: এখানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকার শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের উৎস খুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেছে তার স্বামী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য।

এই ব্যক্তি হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। তার লেনদেনের বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও ব্যাংক থেকে তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া শেষে মামলা করবে দুদক।

দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জাকারিয়া জানান, গত বছর আগস্টের মাঝামাঝি আতার স্ত্রী ৪ নম্বর পৌর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাম্মী আরা পারভীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর অনুসন্ধান করে দুদক। এখন দুজনের বিরুদ্ধে একসঙ্গে মামলা হবে ।  আতাউর রহমান আতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বালুমহাল ব্যবসা, হাটবাজার ইজারা, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতি করে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাম্মী আরা পারভীন তার স্বামীর রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে অবৈধভাবে শতকোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ আছে।

তবে অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন শাম্মী আরা পারভীন ও তার স্বামী আতাউর রহমান আতা। উপজেলা চেয়ারম্যান আতা বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতেই পরিকল্পিতভাবে এসব  অভিযোগ দাঁড় করিয়েছে। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বা অপ্রদর্শিত কোনো সম্পদ আমার নেই। দুদক মামলা করলে আমি তা মোকাবিলা করব।’

দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের মাঝামাঝি ঢাকায় দুদক সদর দপ্তরে জমা পড়া একটি অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থাটি অনুসন্ধান করে জানতে পারে শাম্মী আরা পারভীনের বিভিন্ন ব্যাংকে নগদ প্রায় অর্ধশত কোটি নগদ টাকা রয়েছে। এ ছাড়া দামি জমি, ভবন ও মার্কেটসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে তার। সব মিলিয়ে এসব সম্পত্তির মূল্য শতকোটি টাকার বেশি। একজন স্কুল শিক্ষিকার ব্যাংক হিসাবে থাকা টাকার উৎসের সন্ধান শুরু করে দুদক। তার ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের সূত্রে আতাউর রহমান আতার নাম আসে। এরপর দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক জাকারিয়াকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে তিনি গত ৩০ মার্চ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও ব্যাংকে চিঠি দিয়ে আতার লেনদেনের তথ্য চান। গত বুধবার এপ্রিল এসব তথ্য পান। এখন এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে এই কর্মকর্তা জানান।

দুদক সূত্র জানায়, স্বামী-স্ত্রীর দুজনের সম্পদের হিসাব বিবরণী তলব করে ইতিমধ্যে দুদক নোটিস দিয়েছে। গত বুধবার হিসাব জমা দেওয়ার কথা থাকলেও দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ছিলেন না। আজ-কালের মধ্যে হিসাব জমা দেওয়া হতে পারে।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহিদুর রহমান জানান, ২০১৯ সালের এপ্রিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান আতা। সে সময় তার মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামায় স্ত্রী ও নিজের স্থাবর অস্থাবর-সম্পত্তির বিবরণে যথাক্রমে ১৫ লাখ ও ৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকার ব্যাংক হিসাব এবং সম্পদের তথ্য উল্লেখ করেছিলেন। হলফনামায় বলেছেন, তিনি সরকারি কোনো লাভজনক উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদার নন।