বঙ্গবন্ধুর সমুদ্র আইন প্রণয়নের এক বছর পর জাতিসংঘ সমুদ্র আইন প্রণয়ন করে
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এম.পি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। প্রায় ১৪ বছর কারাভোগ করেছেন। ফাঁসির কথা জেনেও তিনি বাংলার মানুষের মুক্তির কথা বলেছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। একজন দূরদর্শি নেতা হিসাবে স্বাধীনতার পর তিনি সমুদ্র আইনসহ বহু আইন প্রণয়ন করেছেন। তাঁর সমুদ্র আইন প্রণয়নের এক বছর পর জাতিসংঘ সমুদ্র আইন প্রণয়ন করে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে আগামী দিনের ভিত্তি দাঁড় করেছিলেন। সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছেন। বঙ্গোপসাগরে আমাদের অধিকার ছিলনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমরা সমুদ্র বিজয় করেছি। আমাদের এ সম্মান ও মর্যাদা যাতে নষ্ট না হয় সেদিক সতর্ক থাকতে তিনি রেটিংসদের প্রতি আহবান জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের একটি জাহাজ আক্রান্ত হয়। একজন নাবিক শহীদ হন। শেখ হাসিনার সরকারের দক্ষ কূটনৈতিক তৎপরতায় বাকী নাবিক ও শহীদ নাবিকের মরদেহ দেশে আনা সম্ভব হয়েছে। কঠিন পরিস্থিতিতে আমাদের দেশের নাবিকেরা যে সাহস দেখিয়েছে-তা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আজ চট্টগ্রামে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের ২৩তম ব্যাচ ও মাদারীপুর শাখার ১২তম ব্যাচ প্রশিক্ষণার্থী রেটিংসদের প্রশিক্ষণ সমাপনী মুজিববর্ষ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী ও ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন আতাউর রহমান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার নিমিত্তে দেশের সকল সেক্টর একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। সে প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে এবং উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে চলছে। এরই অংশীদার হিসাবে শিপিং সেক্টরও জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকারের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। তাই শিপিং সেক্টরে দক্ষ মানব সম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে ট্রেনিং ইন্সটিটিউটসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, উপমহাদেশের প্রাচীনতম এই
ট্রেনিং ইন্সটিটিউটটিকে মেরিটাইম কর্মকান্ডের কেন্দ্র হিসাবে পরিণত করার লক্ষ্যে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটে সিমুলেটর বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে। যার মধ্যে ব্রীজ সিমুলেটর, ইঞ্জিন সিমুলেটর এবং হাই ভোল্টেজ সিমুলেটর স্থাপন করা হয়েছে। উক্ত সিমুলেটরের মাধ্যমে অফিসার ও রেটিংসদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে এ সেক্টরের দক্ষ জনবল সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট, চট্টগ্রামের নিয়ন্ত্রণে মাদারীপুর শাখার স্থাপনাদির নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে প্রকল্প হস্তান্তর করা হবে। সেখানে প্রতি ব্যাচে ৩০০ জন করে ২টি ব্যাচে প্রতি বছর ৬০০জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা সম্ভব হবে। এরই ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট, কুড়িগ্রাম শাখা স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের সৌজন্যে প্রদত্ত গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত হন অল রাউন্ড রেটিং ইমতিয়াজুল হক এবং মেসার্স হক এন্ড সন্স লিঃ এর সৌজন্যে প্রদত্ত বেস্ট গ্রাউন্ড রেটিং মেডেল প্রাপ্ত হন প্যারেড কমান্ডার ইসতিয়াক ইরফান জিহাদ। তাদেরকে মেডেল প্রদান করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী। উক্ত প্রশিক্ষণ কোর্সে ১২৭জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহন করেন।