Home কৃষি কুড়িগ্রামে হাঁসের খামার গড়ে স্বাবলম্বী আজাদ

কুড়িগ্রামে হাঁসের খামার গড়ে স্বাবলম্বী আজাদ

নয়ন দাস,কুড়িগ্রাম:

হাঁসের খামার গড়ে চমক সৃষ্টি করেছেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের মধ্য উমানন্দ জামতলা বাজারের চায়ের দোকানদার আবুল কালাম আজাদ।

গত দুই বছরে শুধু নিজে স্বাবলম্বী হননি, প্রেরণা জুগিয়েছেন অন্যদেরও। সেই সাথে পাল্টেছে জীবন।

জানা গেছে, দুবছর আগে চায়ের দোকানের ব্যবসা ছেড়ে জমানো প্রায় এক লক্ষ টাকা নিয়ে ২৫/৩০টি হাঁস দিয়ে শুরু করে উন্নত জাতের হাঁস পালন। গত দুই বছরে ছোট বড় মিলিয়ে তার খামারে বর্তমান প্রায় ৬ হাজারের অধিক হাঁস রয়েছে। খামারে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে বিক্রি করছেন। ডিম পাড়া হাঁস রয়েছে ১০০টি। পাশাপাশি দু’শতাধিক দেশি মুরগি পালনের পাশাপাশি বাচ্চাও উৎপাদন করছেন। দুই দিনে এক লট অর্থাৎ ১২শ হাঁসের বাচ্চা উৎপাদনে তার খরচ হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। বিক্রি প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে মাসে আয় দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকা।

খামারি আবুল কালাম আজাদ বলেন, চায়ের দোকান করার সময় টেলিভিশন, মোবাইল ও ফেসবুকে সরকার খামারের উপর খুব উৎসাহ থেকে আমি খামার শুরুর স্বপ্ন দেখি। সেই থেকে চায়ের দোকান না করে হাঁসের খামার করার সিদ্ধান্ত নেই । স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য জমানো এক লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে শুরু করি খামার। বাড়তি শ্রমিক কাজ না করলেও পরিবারের স্ত্রী,সন্তান এবং পুত্রবধুরাও সহযোগিতায় করছেন ।বর্তমানে এই খামার থেকে ৬/৭ লাখ টাকা পূজি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, খামারে রয়েছে উন্নতজাতের খাকি ক্যাম্বল, জেনডিন, রানাডা ও ব্লাকো জাতের হাঁস। ১৫ হাজার টাকায় দুই বছরের জন্য লীজ নেয়া ২টি পুকুরে হাঁস পালনের পাশাপাশি মাছ চাষ করছেন। সেই সাথে হাঁসেরও খাবার জুটছে। দশ জনের ভরণ পোষণ মেটাতে হিমশিম খাওয়া আবুল কালাম আজাদের পরিবার স্বচ্ছল।

আজাদের অভিযোগ উলিপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে কোন প্রকার সহযোগিতা না পাওয়ায় পাশ্ববর্তি গাইবান্ধা জেলার সুদরগঞ্জ উপজেলা থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। এতে করে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া করোনায় প্রায় ৪ শতাধিক হাঁস-মুরগী মারা গেছে।

স্থানীয় মো.নুুরবক্ত মিয়া জানান, আজাদ ভাই গ্রামে খামার করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। অনেক বেকার যুবক তার খামার দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। চাকুরীর পিছনে না ছুটে অল্প পুঁজিতেই এ ধরণের খামার তৈরি করে বেকার ছেলেমেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়ানো সম্ভব বলে আমি মনে করি।

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মো.আব্দুল হাই জানান, স্বল্প পূঁজি নিয়ে আবুল কালাম আজাদ যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, তেমনিভাবে বেকার যুবকরাও যদি এগিয়ে আসে তাহলে আমিষ জাতীয় খাদ্য পরিপূর্ণ হবেপাশাপাশিদারিদ্রতা দূরীকরণ হবে। এছাড়াও জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ হতে সহযোগিতার করা হবে। কুড়িগ্রামে হাঁসের খামার গড়ে বদলে গেছে আবুল কালাম আজাদের জীবন।