Home অন্যান্য  কেন ঘরে ঘরে খ্রিস্টমাস ট্রি, কেন এত উৎসব, জানুন ইতিহাসের কথা

 কেন ঘরে ঘরে খ্রিস্টমাস ট্রি, কেন এত উৎসব, জানুন ইতিহাসের কথা

২৫ ডিসেম্বর, বড়দিন। গোটা পৃথিবীতে পালিত হচ্ছে যিশুর জন্মদিন। যদিও এই জন্মদিন নিয়ে রয়েছে অনেক বিতর্ক। ইতিহাস আর কাহিনি মিলিয়ে বড়দিন নিয়ে অনেক প্রশ্ন। জেনে নিন তারই কিছু উত্তর।

এই পৃথিবীতে অনেক মহামানবই এসেছেন। কিন্তু এমন করে কারও জন্মদিনকে নিয়ে উৎসব হয় না যেমনটা হয় যিশু খ্রিস্টকে ঘিরে। কারও জন্মদিনে এভাবে গোটা বিশ্ব মিলেমিশে একাকার হয় না। ভারতেও সমানভাবে সমাদৃত এই দিন। বাড়িতে বাড়িতে আলোয় রোশনাই, খ্রিস্টমাস ট্রি, তারা, ঘণ্টা। ঘরে ঘরে কেকের আয়োজন। এই বাংলাতেও উৎসব দেখে মনে হতে পারে এ যেন শীতের দুর্গা পুজো। খ্রিস্টমাস আর নতুন বছর বরণের উৎসব মিলে সপ্তাহব্যাপী মাতামাতি।

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উত্‍সব বড়দিন এখন সবার। শুধু খ্রিস্টানরাই নন, গোটা বিশ্বের অন্যান্য ধর্মের মানুষও এই দিনটি পালন করেন। কিন্তু বড়দিন বলতেই আলোর মালায় সাজা ক্রিসমাস ট্রি আমাদের চোখে ভেসে ওঠে কেন?

মনে করা হয়, হাজার হাজার বছর আগে উত্তর ইওরোপে ক্রিসমাস ট্রি-র প্রথা শুরু হয়। এই ফার গাছকে সুখ ও সমৃদ্ধির প্রতীক মনে করা হয়। উত্তর ইওরোপের মানুষ বিশ্বাস করতেন, বাড়িতে চিরসবুজ এই ফার গাছ লাগালে অশুভ শক্তি দূরে সরে যায়। সেখান থেকেই বড়দিনে ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর প্রথা শুরু হয়।

যিশু খৃস্টের জন্মের সঙ্গেও ক্রিসমাস ট্রি যুক্ত আছে। যিশুর জন্মের পরে যাঁরা তাঁর বাবা-মা জোসেফ ও মেরিকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন, তাঁরা নিজেদের বাড়ির এই চিরসবুজ ফার গাছ আলো দিয়ে সাজিয়ে দেন। সেই থেকে যিশুর জন্মদিনে এই গাছ আলোর মালায় সাজানোর প্রথা বলে অনেকে মনে করেন। এমন বিশ্বাসও রয়েছে যে, এই গাছ আদম ও ইভের খেলার জন্য প্রথম পোঁতা হয়েছিল। ষোড়শ শতকে আধুনিক ক্রিসমাস ট্রি প্রথম জার্মানিতে দেখা যায়। আর অষ্টাদশ শতকে প্রায় গোটা বিশ্বেই ক্রিসমাস ট্রি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

গোটা বিশ্বই এখন ২৪ ডিসেম্বর রাত ১২টা থেকে মেতে ক্রিসমাস পালনে। এই দিনকে যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে মেনেই পালন করা হয়। একে অপরের শুভ কামনায় মেতে ওঠেন সবাই। কিন্তু ২৫ ডিসেম্বরেই কেন বড়দিন পালন করা হয়? সত্যিই যিশু খ্রিস্ট এদিনই জন্মেছিলেন? এনিয়েও আছে অন্য মত। অনেক বলেন, চতুর্থ শতাব্দীতে প্রথম ক্রিসমাস পালন শুরু হয়। প্রথমদিকে এই দিনটিকে উত্‍সব আকারে পালন করা হত না। যিশুর জন্ম এবং মৃত্যুর কয়েকশো বছর কেটে যাওয়ার পরে ২৫ ডিসেম্বর তাঁর জন্মদিন হিসেবে পালন করা শুরু হয়। আর যিশু খ্রিস্ট যে ডিসেম্বরে নয়, অক্টোবরে জন্মেছিলেন সে দাবিও নতুন নয়। তার অনেক তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। অনেকে এমনটাও মনে করেন যে রোমের অ-খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই দিনটিকে সূর্যের জন্মদিন হিসেবে পালন করতেন। ঠান্ডায় জমে যাওয়া ইওরোপে ডিসেম্বরে সূর্যের কিরণ চেয়ে উপাসনা করা হত। অনেক পরে খ্রিস্টানরা ২৫ ডিসেম্বর দিনটাকেই যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে পালন করা শুরু করেন।

তবে যে যাই বলুক এখন যিশুর জন্মদিন মানেই বড়দিন। আর বড়দিন মানেই যিশুর জন্মদিন।

-সংকলিত