Home চট্টগ্রাম কেবল সরকারি বরাদ্দে উন্নয়ন সম্ভব নয়: তাজুল

কেবল সরকারি বরাদ্দে উন্নয়ন সম্ভব নয়: তাজুল

বারইপাড়া খাল খনন প্রকল্প ও আমবাগান সড়ক উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন

সরকারি থোক বরাদ্দ না থাকলে উন্নয়ন থেমে থাকবে: সিটি মেয়র

চট্টগ্রাম: স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি শনিবার সকালে নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৬নং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডে বারইপাড়া খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং ১৩নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডে আমবাগান সড়ক উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন করেন।

এ সময় তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সারা দেশের অর্থনৈতিক হৃদপিণ্ড এবং সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের স্বর্ণ দুয়ার। এই সত্যটিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপলব্ধি করেন বিধায় চট্টগ্রামে একাধিক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন এবং করতে যাচ্ছেন। এসব প্রকল্প চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক গুরুত্বকে বাড়াবে এব তার ব্যাপ্তি জাতীয় স্তর পেরিয়ে বৈশ্বিক পর্যায় পর্যন্ত প্রসারিত হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, নগরীর মালিক সিটি কর্পোরেশন। নগরীর সকল উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশনের সম্পৃক্ততা ও দেখ-ভালের দায়িত্বও তাদের থাকতে হবে। সিটি কর্পোরেশনের সক্ষমতার জন্য আয়ের পরিধি বাড়ানো প্রয়োজন। শুধুমাত্র সরকারি বরাদ্দে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই নিজেকে আয় বর্দ্ধনের নতুন নতুন উপায় অন্বেষন করতে হবে।

তিনি বলেন, যোগাযোগ খাত উন্নয়নের পূর্বশর্ত। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দর নগরী এখানে নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বে-টার্মিনাল হচ্ছে। কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে ট্যানেল হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম পরিণত হবে ওয়ান সিটি টু-টাউন হিসেবে। এ কারণে চট্টগ্রাম নগরীর সড়কগুলোর যোগাযোগের পরিধি ও গুরুত্ব বাড়বে। তাই টেকসই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন চসিককে প্রয়োজনীয় ব্যাক-আপ দিতে হবে। মন্ত্রী নগরীর খালগুলোর আবর্জনা অপসারণে একটি অত্যাধুনিক ও কার্যকর যান্ত্রিক সরঞ্জাম হুইল হারবার স্টার চসিককে দেবেন বলে জানান।

 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালউদ্দীন আহমদ বলেন, জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে চট্টগ্রামের গুরুত্ব যে-ভাবে বাড়ছে সে তুলনায় চসিকের ক্ষমতা ও আর্থিক সক্ষমতার পরিধি বাড়েনি। তিনি বলেন, সাবেক মেয়র এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী যে পন্থা ও কৌশল এবং সৃজনশীলতায় চসিককে স্বনির্ভর করেছিলেন সে জন্য সেবা ও উন্নয়ন কাজ কখনো গতিহারা হয়নি। এমনকি সরকারি থোক বরাদ্দের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়নি। তিনি চসিকের নতুন আয়বর্দ্ধক প্রকল্প বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এ জন্য পরিকল্পনা ও সৃজনশীলতা প্রয়োজন। প্রযুক্তি ও কৌশল উদ্ভাবনী জ্ঞান অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে প্রাণ শক্তি দিতে পারে।

সভাপতির বক্তব্যে চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমাদের আয়ের উৎস বিশেষ করে রাজস্ব। আয়ের পরিধি খুবই সীমিত। এই সীমিত আয়ে সাধ্য ও সামর্থ্য দিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ব্যয় নির্বাহ করতে হিমসিম খেতে হয়। তাই সরকারি থোক বরাদ্দ না থাকলে উন্নয়ন থেমে থাকবে। সরকারকে এই বিষয়টি ভাবতে হবে। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামের সেবা সংস্থাগুলোর সকল কাজের সমন্বয়ের দায়িত্ব প্রদান বড় কথা নয়, এতে কাজের কাজ কিছুই হয় না। তাই প্রয়োজন আইনগত ক্ষমতা দেয়া।

মেয়র জানান, জলাবদ্ধতা নিরসণে মেগা প্রকল্পে নগরীর ৩৬টি খালকে অন্তর্ভূক্ত করা হলে যে খালগুলো এর বাইরে রয়েছে সেগুলোকে পুনরুদ্ধার ও খননের জন্য সিটি কর্পোরেশনকে দায়িত্ব ও প্রকল্প না দেয়া পর্যন্ত নগরীতে শতভাগ জলাবদ্ধতা নিরসন হবে না।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পর্যাপ্ত ট্রেন্সিং গ্রাউন্ডের অভাব রয়েছে। যার কারণে বর্জ্য রিসাইক্লিং ব্যবস্থায় হিমসিম খেতে হচ্ছে। তাই চসিক কর্তৃক মন্ত্রণালয়ে বর্জ্য রিসাইক্লিন যে প্রকল্পগুলো পেশ করা হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন। অন্যদিকে চসিকের রাজস্ব আদায়ে অন্যতম খাত ট্রেড লাইসেন্স খাত। কিন্তু নগরীর ব্যবসায়ীগণ বর্তমানে এই ট্রেড লাইসেন্স করতে আগ্রহ হারিয়েছে। কারণ একটি পাঁচশত টাকার ট্রেড লাইসেন্স করতে হলে তাদের তিন হাজার টাকার কর দিতে হয়। এটি সাধারণ ব্যবসায়ীদের জন্য বোঝা। তাই এই বিষয়টি রহিত করার জন্যও মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম আজ চসিকের পুরাতন নগর ভবনের কে.বি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে চসিক কাউন্সিলদের সিটি কর্পোরেশন প্রশাসন অবহিতকরণ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সেরও উদ্বোধন করেন।

বারইপাড়া খাল খনন ও আমবাগান সড়কের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন-চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল আলম, প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এম. আশরাফুল আলম, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, মো. ইসমাইল, সংরক্ষিত কাউন্সিলর আঞ্জুমান আরা, শাহিন আক্তার রোজী, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, আবু সিদ্দিক। উপস্থিত ছিলেন-চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ,প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার। অনুষ্ঠানে কোরআন তেলোয়াত করেন চসিক মাদ্রাসা পরিদর্শক মাওলনা মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী।

-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি