ক্যাব চকবাজার এর উদ্যোগে “নিরাপদ ইফতারী ও রমজানে করনীয় শীর্ষক” আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল
চট্টগ্রাম: কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) চকবাজার থানার উদ্যোগে “নিরাপদ ইফতারী ও রমজান করনীয়” শীর্ষক আলোচনা সভা এবং ইফতার মাহফিল শুক্রবার চকবাজার সাউথ এশিয়ান কলেজ হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন ক্যাব চকবাজার থানার সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল আলীম। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ ।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। উদ্বোধক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ডাঃ মোঃ মাহাফুজুর রহমান।

প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার সাবেরী। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সাবেক ছাত্রনেতা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এম এ হাশেম রাজু, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক নারী নেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস, যুব ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সংগঠক লায়ন সাজ্জাদ উদ্দীন, অধিকার চট্টগ্রামের সংগঠক সাংবাদিক ওসমান জাহাঙ্গীর।
আলোচনায় অংশ নেন যুব ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের রাসেল উদ্দীন, ক্যাব চকবাজার থানার সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মনির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আমির মাহমুদ খসরু রাজু, সহ সম্পাদক মোঃ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইসমাইল সরকার, দপ্তর সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রনি, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আজগর হোসেন, সদস্য মুরাদ, সুমন প্রমুখ।
উদ্বোধনী ভাষণে ডাঃ মাহফুজ বলেন বৈষয়িক বর্তমান সমাজে যেখানে সম্পদের জন্য সন্তান তার পিতাকে খাটে বেঁধে রাখে, সহায় সম্বল ভাগ না করায় পিতার লাশ দাফনে সন্তানরা বাধা দেন, সেখানে ক্যাব সদস্যরা নিঃস্বার্থ ভাবে ১৮ কোটি মানুষের স্বার্থ নিয়ে প্রতিনিয়তই কাজ করে যাচ্ছেন। আর সমাজের কল্যানে এভাবে “নিজের খেয়ে পরের মোষ তাড়ানোর” লোকজনের সংখ্যা প্রতিনিয়তই কমছে। ইফতারী বা খাদ্যে ভেজাল রোধে জনগনের ক্ষমতায়ন দরকার। কারণ সরকারি সংস্থার লোকজন এগুলো রোধ করতে পারছে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, খাদ্যে ভেজাল রোধে সরকার নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠন করেছেন। কিন্তু সেটি এখন “কাজীর গরু খাতায় আছে, গোয়ালে নাই”। এই রমজানে ভেজাল ও মানহীন ইফতারী খেয়ে মানুষ রোগাক্রান্ত হচ্ছে। চট্টগ্রামে পথে ঘাটে ওরশ বিরিয়ানীর নামে মহাবানিজ্য কিন্তু নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙ্গে না। তারা শুধু সরকারি-বেসরকারী বরাদ্দ পেলেই কার্যক্রম করতে পারে। তাই ভোক্তা হিসাবে আমাদের অধিকার আদায়ে আমাদেরকে সংগঠিত হয়ে, আমাদের অধিকার আমাদেরকেই আদায় করে নিতে হবে। জুলাই আন্দোলনের কোমলমতি শিশুরা যেভাবে দেশকে স্বৈরশাসকের কবল থেকে মুক্ত করেছে, ঠিক একইভাবে অসাধু ব্যবসায়ী ও ভেজালকারীদের কবল থেকে মুক্ত করতে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হবার বিকল্প নাই। কারণ এই অসাধু চক্রটি একবার সয়াবিন তেল, একবার চাল, একবার পেয়াজ এভাবে রুটিন করে প্রতিটি পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরী করছে, আর সরকারের দায়িত্বশীল লোকজন বিগত সরকারের মতো সবকিছু ঠিক আছে বলে সার্টিফিকেট দিয়ে জনগনের অধিকারকে অবজ্ঞা করছে। আর মানুষ পোড়া ও খোলা, পামতেল খেয়ে অকালে হৃদরোগসহ নানা প্রাণঘাতি রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা সয়াবিনের নামে পাম তেল ধরিয়ে দিচ্ছেন।
মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার সাবেরী বলেন, সব ধরনের ব্যবসায়ী এমনকি রিকসাওয়ালা পর্যন্ত সংগঠিত আর ভোক্তা হিসাবে আমরা অসংগঠিত, সেকারনে অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নিয়ে মানুষের পকেট কাটছে। আর সরকারের দায়িত্বশীল লোকজন এগুলোকে স্বাভাবিক বলছে। মানুষের কল্যাণ করতে চাইলে তৃণমূল পর্যায়ে এধরনের অপকর্মগুলোকে সামাজিকভাবে প্রতিহত করতে হবে।
-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি