Home Uncategorized ‘খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য থেকে পেঁয়াজের রাজনীতিতে আসায় বিএনপিকে ধন্যবাদ’ তথ্যমন্ত্রীর

‘খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য থেকে পেঁয়াজের রাজনীতিতে আসায় বিএনপিকে ধন্যবাদ’ তথ্যমন্ত্রীর

তথ্যমন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপিকে ধন্যবাদ জানাই যে, তারা তাদের রাজনীতিকে বেগম জিয়ার অসুস্থতা থেকে বের করে এনে পেঁয়াজের মধ্যে নিয়ে এসেছেন।’

‘তবে পেঁয়াজের এই উচ্চমূল্য থাকবে না, কারণ বিদেশ থেকে বিমানে করে পেঁয়াজ আসছে, দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজও বাজারে এসেছে, আসা শুরু করেছে; সুতরাং খুব সহসা এই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে’, বলেন ড. হাছান।

আজ রবিবার দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী ঐক্যজোট আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিএনপিকে বলবো, আপনারা বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে যে অপরাজনীতি সবসময় করে আসছেন, সেখান থেকে যে পেঁয়াজের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছেন, এটি ভালো। আমি অনুরোধ জানাবো, আপনারা অবশ্যই সরকারের সমালোচনা করুন। সরকার কোথায় ব্যর্থ হচ্ছে, সেটি তুলে ধরুন। কিন্তু সরকার যে আজকে নানাক্ষেত্রে প্রচন্ডভাবে সফল, এটি বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বলছে, বিশ্বব্যাংক বলছে, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বলছে, সেটিই আপনারা দয়া করে বলবেন, তাহলেই সেটি দায়িত্বশীল বিরোধী দলের কাজ হয়।’

পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের ব্যবস্থার কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘কারা এই পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির সাথে যুক্ত, সেটা বের করার জন্য গোয়েন্দারা মাঠে নেমেছে। যারা এই পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি ঘটিয়েছে, যারা দায়ী হবে, দায়ী হিসেবে যাদেরকে চিহ্নিত করা হবে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষকে জিম্মি করে এইভাবে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ানো কোনোভাবেই ব্যবসার নীতি হতে পারে না। সরকার টিসিবির মাধ্যমে ঢাকা শহরে এবং বিভিন্ন জায়গায় ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। খুব সহসাই ইনশাল্লাহ দাম কমে যাবে, স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।’

মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মাওলানা ভাসানী কখনো ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি। তিনি রাজনীতিকে একটি ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। তিনি যদি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করতেন, তাহলে পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী এবং পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হতে পারতেন। তার হাত ধরেই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি, শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ গঠিত হয়েছে। পরের বছর ১৯৫০ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে সভাপতি করে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। অর্থাৎ এই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বেই।’

মন্ত্রী বলেন, ‘মাওলানা ভাসানী বলতেন, শেখ মুজিবের যে সাংগঠনিক দক্ষতা, সেটি আর কারো মধ্যে নেই। এবং বঙ্গবন্ধু মুজিব যতদিন বেঁচে ছিলেন, মাওলানা ভাসানীকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন এবং তার দেখভালও করতেন। এবং মাওলানা ভাসানী যেভাবে রাজনীতিকে ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন, আমি মনে করি যুগ যুগ ধরে তাঁর কাছ থেকে রাজনীতিক শেখার অনেক কিছুই আছে। কারণ রাজনীতি হচ্ছে একটি ব্রত, জনসেবা।’

 ‘সমাজ পরিবর্তনের জন্য দেশ পরিবর্তনের জন্য ক্ষমতার প্রয়োজন আছে, কিন্তু শুধু ক্ষমতা রাজনীতির মূল প্রতিপাদ্য নয়, রাজনীতি একটি ব্রত’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনেকরি, সর্বক্ষেত্রে যে অবক্ষয়, শিক্ষার বণিকায়ন, স্বাস্থ্যের বণিকায়ন, রাজনীতিতে বণিকায়ন, সর্বক্ষেত্রে বণিকায়ন এবং সর্বক্ষেত্রে পুঁজির ব্যবহার থেকে রাজনীতিকে মুক্ত করা প্রয়োজন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমি বলতে চাই, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবেও অন্যদল করতেন। রিজভী সাহেরও ছাত্রজীবনে অন্য দল করতেন। মওদুদ আহমেদ সব দলই করেছেন। বিএনপিতে বড় বড় নেতা বেশির ভাগই হচ্ছে দলছুট নেতা। সেই দলছুট নেতাদের আমরা দেখতে পাচ্ছি, গত কয়েকদিন ধরে নানা ইস্যুতে কথা বলছে।’

আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, এম এ করিম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন।