বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, , ‘আসলে বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়াতে বিএনপি প্রচণ্ডভাবে আহত ও হতাশ। তা এ জন্য যে, এ বিষয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার আর সুযোগ নেই।’
খালেদা জিয়ার সুস্থ হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। তিনি বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশকে সহায়তা পুনর্বিবেচনা ও বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের যে চিঠি দিয়েছিলেন- তা এখন সরকারের হাতে রয়েছে।
এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো বিএনপি মহাসচিব স্বাক্ষরিত চিঠি ও বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে বিএনপির ঢাকা অফিসের ঠিকানা সম্বলিত চুক্তিনামা সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করা, দেশের রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করা, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা, দেশকে বিদেশিদের কাছে বিব্রত করার জন্য বিদেশিদের কাছে বিএনপি যে চিঠি লিখেছে এবং লবিস্ট নিয়োগ করেছে, এ জন্য দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব সংবাদ সম্মেলন করে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি যে বিদেশিদের কাছে চিঠি লিখেছেন সেটি শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেছেন, কিন্তু সাহায্য বন্ধ করার জন্য যে বলেছেন, সেটি অস্বীকার করেছেন।
হাছান মাহমুদ এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য বিষয়ক হাউজ কমিটির চেয়ারম্যান ও বৈদেশিক প্রোগ্রাম বরাদ্দবিষয়ক সিনেট কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে ১৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে লেখা এবং বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক সিনেট কমিটির চেয়ারম্যান ও নিকটপূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া এবং কাউন্টারটেররিজম বিষয়ক সিনেট সাব-কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে ২৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে লেখা বিএনপি’র প্যাডে মির্জা ফখরুল সাহেব স্বাক্ষরিত চিঠির কপিগুলো তুলে ধরেন।
মন্ত্রী চিঠিগুলোর শেষ অনুচ্ছেদ পড়ে শোনান এবং বলেন, সেখানে বাংলাদেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য দেওয়াকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা অর্থাৎ প্রকারান্তে সাহায্য বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
তথ্যমন্ত্রী লবিস্টদের সঙ্গে বিএনপির চুক্তিপত্রগুলো দেখিয়ে উল্লেখ করেন, ‘বিএনপি কয়েকটি চুক্তিতে তাদের কার্যালয়ের ঠিকানা ২৮ ভিআইপি রোড, নয়াপল্টন, ঢাকা, বাংলাদেশ দিয়েছে, তাদের পক্ষে জনাব আব্দুস সাত্তার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন এবং একই ধরনের চুক্তি তারা বিদেশের ঠিকানা দিয়ে করেছেন, সেখানে স্বাক্ষর করেছেন জনাব জিয়াউল ইসলাম।’
‘মির্জা ফখরুল সাহেব এই ডকুমেন্টগুলো কীভাবে অস্বীকার করবেন’ প্রশ্ন রেখে ড. হাছান বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপি নেতারা যে প্রচণ্ড মিথ্যাচার করেন, দেশের বিরুদ্ধে তারা যে ষড়যন্ত্র করছেন, এগুলো হচ্ছে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। শুধু তাই নয়, তারা যে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়েও ক্রমাগতভাবে মিথ্যাচার করেছে, বেগম জিয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার মাধ্যমেই তা প্রমাণিত হয়েছে। অর্থাৎ তাদের পুরো রাজনীতিটাই মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত। জলজ্যান্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে সংবাদ সম্মেলন করে মির্জা ফখরুল সাহেব মিথ্যাচার করেছেন সেই প্রশ্ন আমারও। পুরো জাতি যখন তাদের ধিক্কার দিচ্ছে, তখন তিনি আত্মরক্ষার্থে সংবাদ সম্মেলন করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা করেছেন কিন্তু সেটি ঢাকা যাচ্ছে না। যে রাজনৈতিক দল এ ধরনের কাজ করে, তাদের আসলে দেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয়।’