Home সারাদেশ গভীর রাতে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

গভীর রাতে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, বগুড়া: শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে সাবগ্রাম মধ্যপাড়া এলাকায় নিজ বাসায় খুন হয়েছে মা ও মেয়ে। নিহতরা হলেন- মা আনোয়ারা বেগম (৫৮) ও মেয়ে ছকিনা বেগম (৩৫)। আনোয়ারা বেগম মৃত নয়া মন্ডলের স্ত্রী।

জোড়া খুনের ঘটনার জন্য ছকিনার প্রাক্তন স্বামী হাসনাপাড়া গ্রামের রুবেল হোসেনকে দায়ী করেছেন নিহতদের স্বজনরা। তারা জানান, রুবেল হোসেনের সাথে পারিবারিক কলহের জেরে বিয়ের ৭ বছর পর বিচ্ছেদ হয়েছে । তা সত্ত্বেও রুবেল শুক্রবার দিবাগত রাতে ছকিনার বাড়িতে প্রবেশে করে। সেখানে তা নিয়ে বাগবিতণ্ডা  হয়। একপর্যায়ে রুবেল ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছকিনাকে কুপিয়ে আহত করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে ছকিনার মা আনোয়ারা বেগমকেও (৫৮) কোপানো হয়।

মা-মেয়ের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে ছকিনা ও সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আনোয়ারা বেগমের মৃত্যু হয়। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ছকিনার ছেলে সাব্বির আহম্মেদ বলেন, গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রুবেল বাড়িতে এসে তার মাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। তাকে ছেড়ে দিয়ে প্রথম স্বামী বাদশা মিয়াকে বিয়ে করায় তাদের মধ্যে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে সঙ্গে নিয়ে আসা রামদা দিয়ে কোপানো শুরু করেন। এ সময় তার নানি আনোয়ারা বেগম এগিয়ে গেলে তাকেও কুপিয়ে রুবেল পালিয়ে যান।

ছকিনা বেগমের মামাতো ভাই রবিউল ইসলাম জানান, প্রথম স্বামীর সঙ্গে তালাক হওয়ার পর রুবেল হোসেনের সঙ্গে ছকিনার বিয়ে হয়। এরপর ছকিনা তার প্রথম পক্ষের সন্তান সাব্বিরকে নিয়ে বগুড়া শহরের আকাশতারা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। রুবেল মাদকাসক্ত এবং চুরির সঙ্গে জড়িত থাকায় ছকিনা তাকেও তালাক দেন। এরপর ছকিনা তার মা আনোয়ারা বেগমকে গ্রাম থেকে নিয়ে এসে আলাদা বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এক বছর আগে রুবেলের অনুরোধে ছকিনা আবারও তার সংসারে ফিরে যান। কিন্তু রুবেল তার স্বভাব পরিবর্তন না করায় ছয় মাস আগে আবারও দুজনের বিচ্ছেদ হয়।

রবিউল আরও জানান, মা-মেয়ে সাবগ্রাম দক্ষিণপাড়ায় ২ শতাংশ জায়গা কিনে সেখানে টিনের ঘর তৈরি করে বসবাস করছিলেন। এক মাস আগে ছকিনা তার প্রথম স্বামী বাদশা মিয়াকে বিয়ে করেন। বাদশা মিয়া তার গ্রামের বাড়ি সারিয়াকান্দি উপজেলার হাসনাপাড়া গ্রামে বসবাস করেন। রুবেল এ খবর জানতে পেরে ছকিনার ওপর ক্ষুব্ধ হন।

নারুলী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজমুল হক বলেন, ঘটনা ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাড়ির পার্শ্বের বাঁশ ঝাড় থেকে রক্ত মাখা রামদা উদ্ধার করেছে। ভোর ৫টা পর্যন্ত পুলিশের একাধিক টিম রুবেলকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালিয়েও পাওয়া যায়নি। নিহত মা-মেয়ের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মইনুদ্দিন জানান, ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন রুবেলকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনা এখনও মামলা হয়নি।