বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
কলকাতা: সুপার সাইক্লোনিক ঝড় এই মুহূর্তে দিঘা উপকূল থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে মুখ করে এগিয়ে আসছে সেটি। এখনও পর্যন্ত যেমন এবং যতটা গতি, তাতে আগামীকাল বুধবার ২০ মে বিকেলে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল পার করবে। এমনটাই জানালেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও জানান, পশ্চিমবঙ্গের দিঘা ও বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের ওপর দিয়েই সর্বোচ্চ গতিতে বয়ে যাওয়ার কথা । তবে সুন্দরবনের গা ঘেঁষে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। এর গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৬৫ থেকে ১৭৫ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ ১৮৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টাও হতে পারে ঝড়ের গতি।
এছাড়াও অনেক গাছ পড়তে পারে, লাইটপোস্ট উপড়ে যেতে পারে। নোঙর করা নৌকো খুলে যেতে পারে, উড়ে যেতে পারে বাড়ির চাল। চার-পাঁচ মিটার উঁচু ঢেউ উঠতে পারে।বুধবার সকালের পর থেকে মানুষের ঘর থেকে বেরোনো বন্ধ করা উচিত বলে পরামর্শ দেন সঞ্জীববাবু।
বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী মানুষদের কোলে করে নামাচ্ছে পুলিশ
সুন্দরবনের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঘোড়ামারা। সেখান থেকে প্রায় চার হাজার মানুষকে তুলে নিয়ে এল পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের লোকজন। সাগরের ফ্লাড সেন্টারে রাখা হচ্ছে তাঁদের। বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী বহু মানুষদের নৌকা থেকে নামিয়ে কোলে করে ফ্লাড সেন্টারে পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে একেকটি সেন্টারে যত লোককে রাখা যায় তার অর্ধেক সংখ্যক মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে । এই সমস্ত ফ্লাড সেন্টারে মাস্ক ও স্যানেটাইজারেরও ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা।
পুলিশ জানান, শুধুমাত্র মূল্যবান জিনিসগুলি নিয়ে বাড়ি ছাড়তে বলা হয় এলাকার বাসিন্দাদের। কেউ পেরেছেন, কেউ পারেননি। কেবল দরজায় তালা ঝুলিয়ে প্রাণ নিয়ে বেরিয়ে এসেছেন।
সুন্দরবনের বাঘ ঢুকতে পারে লোকালয়ে
সুপার সাইক্লোন আছড়ে পড়ার পর সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে বাঘ চলে আসতে পারে লোকালয়ে। তাই আগাম সতর্কতা হিসেবে বাঘেদের গতিবিধির উপর নজর রাখতে গোসাবায় কন্ট্রোল রুম খুলল বনদফতর।
বুধবার দুপুরে আছড়ে পড়ার কথা । তারপর বাঘ যাতে লোকালয়ে না আসতে পারে তার নজরদারিতে তৎপর প্রশাসন। বন্যপ্রাণী বিভাগের প্রধান ওয়ার্ডেন রবিকান্ত সিনহা বলেছেন, ম্যানগ্রোভ অরণ্যে তীক্ষ্ণ নজরদারি রাখার জন্য গোসাবায় কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। মূল কন্ট্রোল রুমটি হবে সল্টলেকে। সেখান থেকেই বাঘ-সহ বন্যপ্রাণীদের গতিবিধির উপর নজরদারি চালানো হবে। প্রয়োজন মতো সল্টলেক থেকে নির্দেশ যাবে গোসাবার কন্ট্রোল রুমে।
বনদফতরের এক অধিকর্তা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে বাঘ যদি গভীর জঙ্গল থেকে সংলগ্ন গ্রামে ঢুকে পড়ে তখনই রেসপন্স টিম তাদের জঙ্গলে ফিরিয়ে দিতে পদক্ষেপ করবে।