Home First Lead পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে খরচ বাড়বে ১৮ হাজার কোটি টাকা

পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে খরচ বাড়বে ১৮ হাজার কোটি টাকা

শিল্প খাত ও ক্যাপটিভ পাওয়ারে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি না করার আহ্বান

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা:শিল্প খাত ও ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্টগুলোতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পরিকল্পনা স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ এবং বিটিটিএলএমইএ। সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এই আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনগুলো।

শিল্প খাতে গ্যাসের দাম প্রায় ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাবে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠিতে উল্লেখ করা হয় , গ্যাসের দাম বাড়লে পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পের ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোতে বছরে অতিরিক্ত প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। শিল্পায়ন ও অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে যখন শিল্প খাতে গ্যাসের মূল্য ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছিল, তখন শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে তার সুফল শিল্প পায়নি।

আরও উল্লেখ করা হয়, সরকার শিল্প খাতে গ্যাসের মূল্য পুনরায় বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে, যা প্রতি ঘনমিটারে প্রায় ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৭৫ টাকা করা হতে পারে। এরূপ মূল্য বৃদ্ধি কার্যকর করা হলে তা শিল্পায়ন ও অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। করোনা মহামারির অভিঘাত মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াতে না দাঁড়াতে আমাদের বস্ত্র ও পোশাক খাত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির চাপের সম্মুখীন হয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, তবে বিগত তিন অর্থবছরের তুলনামূলক প্রবৃদ্ধি বিচারে রপ্তানিতে স্থবিরতা বিরাজ করছে, যা অর্থনীতির ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির জন্য উদ্বেগজনক।’

চিঠিতে বলা হয়, ‘বিগত পাঁচ বছরে গ্যাসের মূল্য বেড়েছে ২৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ, বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, ডিজেলের মূল্য বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। এছাড়া ব্যাংক-সুদ বৃদ্ধি পেয়ে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ হয়েছে। সার্বিকভাবে বিগত পাঁচ বছরে কারখানার গড় উৎপাদন খরচ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই রপ্তানি খাতে প্রচলিত প্রণোদনা কমিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির উদ্যোগটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন আমাদের কারখানাগুলো গ্যাসের অপর্যাপ্ত চাপ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে এবং ব্যাপক আর্থিক লোকসানের শিকার হচ্ছে। আমাদের শিল্পঘন এলাকাগুলোতে, বিশেষ করে গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারে অবস্থিত কারখানাগুলোয় গ্যাস-সংকটের কারণে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ হারে উৎপাদন কমে গেছে। শিল্পে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি রপ্তানি বিঘ্নিত হচ্ছে, লিড টাইম ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে এবং আমরা ক্রেতাদের আস্থা হারাচ্ছি। এরকম পরিস্থিতিতে শিল্প খাত ও ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্টগুলোতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পরিকল্পনা স্থগিতের আহ্বান জানানো হয় চিঠিতে।