বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
মসৃণ গাল, লোমহীন পেলব হাত এখন আর মেয়েদের একচেটিয়া কপিরাইট নয়। নারী-পুরুষের চিরাচরিত সংজ্ঞায় বদল এসেছে। , পুরুষালি বা মেয়েলি— এমন কোনও একটি খাঁচায় নিজেদের পুরে ফেলতেই স্বচ্ছন্দ আমরা।
পুরুষ মানেই লোমশ বুক, কঠিন পেশি, আবেগহীন রুক্ষ কোনও চরিত্র। আর নারী ঠিক তার বিপরীত। কিন্তু বর্তমান ডিজিটাল যুগে জেন এক্স-জেন ওয়াইয়ের পছন্দ একটু অন্যরকম। মেয়েদের চেয়ে পুরুষেরা যে কম অবেগপ্রবণ বলে সমাজের গতেবাঁধা ধারণা রয়েছে, তা এখন গ্রাহ্য করেন না অনেকেই। বরং মহিলাদের চোখে সেই পুরুষই আকর্ষণীয় যিনি মাথার চুল থেকে পায়ের নখ অবধি নিজেকে পরিচর্যার মধ্যে রেখেছেন।
বেডরুমে যদি কোনও মহিলাকে আকর্ষণ করতে হয় তাহলে পুরুষেরও দরকার গ্রুমিং। ব্যাপারটা মোটেও হাস্যকর নয়। গ্রুমিং মানেই মনে হতে পারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পুরুষও কোনও সাঁলোতে বসে ফেশিয়াল, ওয়াক্সিং ইত্যাদি করছেন। এখনকার সময়ে কিন্তু সেটাও হচ্ছে। পুরুষরাও একইভাবে নিজেদের সুন্দর রাখছেন। স্টাইল স্টেটমেন্টে পুরুষরাও পিছিয়ে নয়। সে স্মার্ট ড্রেসই হোক বা মেকআপে। বিশেষজ্ঞরাই বলছেন, সঙ্গীকে যৌন তৃপ্তি দিতে হলে বা পছন্দের কারোর মন জয় করতে হলে আগে নিজেকে ফিটফাট, পরিচ্ছন্ন রাখতেই হবে।
গ্রুমিংএ কী কী করতে হবে পুরুষকে?
১) সবচেয়ে আগে তো পিউবিক হেয়ার পরিষ্কার করতে হবে। নিয়মিত স্নানের সময় হেয়ার রিমুভ করা, স্ক্রাবিং করা জরুরি। নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখলে তবেই আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
২) এক সময় লোমশ বুকের ছেলেই বেশি পছন্দ ছিল মহিলাদের। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। সুন্দর করে ট্রিম করা চুল, ওয়াক্স করা ঝকঝকে স্কিনই পছন্দ করছে মেয়েরা। বনমানুষের মতো লোমশ শরীর এখন আর মেয়েদের মন টানে না।
৩) কোনও প্রসাধনী স্নান করার চেয়ে বেশি সতেজতা দিতে পারে না। ভাল করে স্নান করে দিন শুরু করলে মনও বেশ চনমনে থাকে। পিউরিফাইং বিড দেওয়া শাওয়ার জেল ত্বক হাইড্রেটেড রাখে এবং ত্বক পরিষ্কার রাখে। পুরুষালি গন্ধের শাওয়ার জেল ব্যবহার তাই গ্রুমিং রুটিনের সবচেয়ে ভাল উপায়। সাবানের পরিবর্তে শাওয়ার জেল ব্যবহার করার কারণ এই যে এটি চটজলদি সতেজতা দেয় এবং ত্বকের স্বাভাবিক তৈলাক্ত ভাব বজায় রাখে। পিএইচ ব্যালেন্সড যুক্ত শাওয়ার জেলে চারকোল থাকলে দীর্ঘক্ষণ সুগন্ধ বজায় থাকে।
৪) চেহারা ঝকঝকে, কিন্তু ঠোঁট ফাটা- দেখতে কি ভাল লাগে? তাই শিয়া বাটার এবং প্যানথেনল যুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করা উচিত যা দীর্ঘক্ষণ ঠোঁটকে শুষ্ক হওয়া থেকে বাঁচায়।
৫) বেডরুমে সঙ্গীকে ডাকলে মোজা পরে কখনওই থাকবেন না। জামাকাপড়ে যেন গন্ধ না থাকে সেটা দেখে নিতে হবে। মাউথ ফ্রেশনার অবশ্যই ব্যবহার করবেন। আর নিজের বিছানা পরিচ্ছন্ন রাখতেই হবে। গোছানো, ফিটফাট পুরুষই বেশি পছন্দ করে এখনকার মেয়েরা।
৬) হাতের নখও কিন্তু সৌন্দর্যের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পুরুষ মানেই খেটে খাওয়া হাত, রুক্ষ আঙুল, ফাটা বা কালো হয়ে যাওয়া নখ মহিলাদের আকর্ষণ নাও করতে পারে। তাই নখ সবসময় কেটে পরিষ্কার রাখবেন। দরকার হলে ম্যানিকিওর করিয়ে নেবেন, লজ্জা কী!
৭) কয়েক বছর ধরেই একমুখ দাড়ি ছেলেদের ফ্যাশনের অন্যতম হাতিয়ার। বিশেষ করে যাঁরা নিজের লুক নিয়ে মাঝে মধ্যেই পরীক্ষানিরীক্ষা চালান, তাঁরা অনেকেই এই দাড়ি রাখার বিষয়ে বেশ শৌখিন। কখনও বা ভ্যান ডাইক, কখনও রয়্যাল আবার কখনও সার্কল বিয়ার্ডে সেজে ওঠেন তাঁরা। এ ছাড়াও রয়েছে দাড়ির আরও রকমফের। এক মুখ ঘন দাড়ি চেহারা যেমন বদলে দেয়, তেমন ব্যক্তিত্বেও আনে আলাদা ছাপ।
বহু সেলিব্রিটিরও এই দাড়ি রাখার প্রবণতা রয়েছে।তবে দাড়ি কেবল রাখলেই হয় না। তার জন্য প্রয়োজন কিছু যত্ন নেওয়াও। নইলে দাড়ির স্বাস্থ্য যেমন খারাপ হবে, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে শরীরেও নানা সংক্রমণ। আর মহিলাদের আকর্ষণ করতে দাড়ির যত্ন নিতে হবে বৈকি। দাড়িওয়ালা পুরুষ এখনকার মেয়েদের বিশেষ পছন্দের। তাই নিয়মিত ট্রিম করা, যত্ন নেওয়া জরুরি।