বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
কক্সবাজার: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের সীমান্তের পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে মিয়ানমার অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলি শব্দ শুনা যাচ্ছে। রাত ৮ টার দিকে ঘুমধুম ঘোনার পাড়া সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পরপর ৫ টি মর্টার শেল এসে বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলে একজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শূণ্যরেখায় বসবাসকারি রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা দিল মোহাম্মদ।
তিনি জানান, সন্ধ্যার পর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি, মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনা গেছে। রাত ৮ টার দিকে শূন্য রেখায় বসবাসকারি রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে এসে পড়ে ৩ টি মর্টার শেল। ক্যাম্পের নিটকর্বতী এলাকায় এসে পড়ে আরো ২ টি মর্টার শেল। ৫ টি মর্টার শেল বিস্ফোরণ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে ঘটনাস্থলে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরো অনেকেই।
অপর রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ আরিফ জানান, আহতদের মধ্যে ৪ জনকে উদ্ধার করে কুতুপালংস্থ এমএসএফ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের নাম মোহাম্মদ ইকবাল (১৮) বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিজিবি, পুলিশ সহ সংশ্লিষ্টদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে’ বাংলাদেশি এক যুবক আহত হয়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম জানান, শুক্রবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি চাকমা পাড়া সীমান্তের ৩৫ নম্বর পিলারের সংলগ্ন মিয়ানমারের ১০০ গজ অভ্যন্তর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনায় আহত হয়েছে স্থানীয় অংথোয়াইং তঞ্চঙ্গা (২২) নামের এক যুবক। তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি চাকমা পাড়ার অঙ্গোথোয়াই তঞ্চঙ্গার ছেলে।
মাইন বিস্ফোরণে আহত যুবকের একটি পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের বরাতে ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, শুক্রবার সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি চাকমা পাড়া সীমান্তের ৩৫ নম্বর পিলার সংলগ্ন এলাকায় আকস্মিক বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সীমান্তে মিয়ানমারের ১০০ গজ অভ্যন্তরে এক যুবককে আহত অবস্থায় পরে থাকতে দেখেন।
” এতে আহত স্থানীয় এক যুবকের একটি পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আহত যুবককে উদ্ধার করে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করছেন। ”
স্থানীয়রা ও স্বজনদের বরাতে ইউপি সদস্য বলেন, ” সকালে সীমান্ত এলাকায় গরু চড়াতে যান অংথোয়াই সহ স্থানীয় আরও কয়েক যুবক। এক পর্যায় গরু সীমান্তের শূণ্যরেখা অতিক্রম করে মিয়ানমার অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। এসময় গরু ফিরিয়ে আনতে সেখানে গেলে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্তে মিয়ানমার অভ্যন্তরে মাইন বিস্ফোরণে এ ঘটনা ঘটেছে। কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্য মো. রিপন চৌধুরী জানান, বিকালে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত এক পাহাড়ী যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) প্রেরণ করেছেন।
বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত যুবকের বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে জানান হাসপাতালে দায়িত্বরত এ পুলিশ সদস্য।