কলকাতার ইতিহাস
সংক্ষিপ্ত বললেও কলকাতার ইতিহাস আসলে অনেক বিস্তারিত। শুরু হয় সেই ১৬৯০ সালে যখন তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এজেন্ট জব চারনক অনেক চিন্তা ভাবনার পর এই এলাকাটিকে তাদের ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু বানানোর কথা ভাবেন। এ লক্ষ্যে সুতানুটি, গোবিন্দপুর এবং কালিকাটা নামে তিনটি গ্রাম তাঁরা কিনে নেন স্থানীয় জমিদারদের কাছ থেকে।
মুঘলরা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ব্যাবসা করার স্বাধীনতা দেন বাৎসরিক ৩০০০ রুপির বিনিময়ে। এরপর ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলকাতা দখল করে নেন। কিন্তু বেশিদিন তিনি তা ধরে রাখতে পারেননি। ১৭৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধের পর লর্ড ক্লাইভ কলকাতার দখল নিয়ে নেন। ১৭৭২ সালে কলকাতাকে ভারতবর্ষের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং প্রথম গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেষ্টীং সকল গুরুত্বপূর্ণ অফিস মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় স্থানান্তর করেন। তখন থেকেই সমগ্র ভারতবর্ষে কলকাতার গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। পরবর্তী প্রায় ১৩৯ বছর ভারতবর্ষের রাজধানী হিসেবে কলকাতা থেকে যায়।
প্রিয় পাঠক আশা করি বুঝতেই পারছেন যে বর্তমান ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ, এই তিনের রাজধানী ছিল কলকাতা। তাই এর গুরুত্ব সহজেই অনুমান করা যেতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতা ও গুরুত্তের শীর্ষে অবস্থান করেছে এই শহর। হয়েছে অনেক ঘটনারই সাক্ষী। “আনন্দ নগরী” নামে পরিচিত কলকাতা- মাদার টেরেজা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্যজিৎ রায় এবং সুভাষ চন্দ্র বোস এবং আরও অনেক বিখ্যাত ব্যাক্তির পদচারনায় মুখরিত হয়েছে। কালজয়ী এই শহর ধীরে ধীরে পরিনত হয়েছে বাংলা সংস্কৃতির বিশিষ্ট প্রতিনিধি হিসেবে। এই শহর যদি ভ্রমণ না করা হয়, বাঙ্গালি হিসেবে আপনার জীবন কিছুটা না, অনেকটাই অপূর্ণ থেকে যাবে।
কখন বেড়াতে যাবেন কলকাতা
কলকাতা না গেলেও এর আবহাওয়া সম্পর্কে অনেকেই ধারণা করতে পারেন এ ভৌগলিক অবস্থান থেকে। কলকাতার আবহাওয়া বেশ গরমই বলা চলে। এখানে প্রধানত তিনটি ঋতু বিরাজ করে – গ্রীষ্ম, বর্ষা এবং শীত। গ্রীষ্ম কাল শুরু হয় এপ্রিল এবং শেষ হয় জুন মাসে। গরমে তাপমাত্রা প্রায় ৩৫-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর কাছাকাছি চলে যায়। তাই এ সময়ে ভ্রমণ করাটা বেশ কঠিনই হয়ে যায়। তাই এই ঋতু এড়িয়ে চলাই ভাল। কলকাতা ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভাল সময় হল বর্ষাকাল (জুলাই – সেপ্টেম্বর) এবং শীতকাল (অক্টোবর – ফেব্রুয়ারি)। বর্ষাকালে তাপমাত্রা থাকে ২০-২৫ ডিগ্রি যা খুবই আরামদায়ক। শীতকালে তাপমাত্রা নেমে যায় ৯-১১ ডিগ্রিতে। তারমানে একেবারে হাড় কাঁপানো শীতও পরবে না। অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে গেলে বেশ আরামদায়ক পরিবেশেই কলকাতা ভ্রমণ করতে পারবেন।