রাজনৈতিক অস্থিরতা, আন্দোলন, ধর্মঘট- কোনও কিছুই যা আটকাতে পারে না, তা প্রকৃতির রূপ। তেমনই এক অপার আশ্চর্য্যের নাম দার্জিলিং। সুদীর্ঘ টানাপোড়েন সত্ত্বেও যার আকর্ষণ সেই আদি এবং অকৃত্রিম। পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা সাদা-কালো মেঘ। তার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেওয়া সবুজ চা বাগান, এলোমেলো রাস্তার বাঁক, রেলিং, সিড়ি, খেলনা বাড়ি, টয় ট্রেন। পাইন, ফার, রডোডেনড্রনের জঙ্গলের কান ঘেঁষে বয়ে চলা শিরশিরানি বাতাস এখনও আগের মতোই তরতাজা। এহেন শৈলশহরে মন ভাসাতে কে না চাইবে বলুন! তবে দার্জিলিং-এ কিছু পেতে গেলে যেতে হবে সবান্ধবে। কারণ এর গন্ধে রয়েছে একাত্মতা। কেন দার্জিলিং কেন দার্জিলিং দলবদ্ধভাবে বেরিয়ে পড়ার আগে দার্জিলিং নিয়ে বই ওল্টানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হতেই পারে। অথচ এমন এক স্থান, যা নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে অতীতে। ‘খাদের ধারের রেলিং, সেই দুষ্টু দু ধ সিড়িং’ বার বার উঁকি দিয়েছে অঞ্জন দত্তের চলচ্চিত্রায়নে। কাঞ্চনজঙ্ঘার প্রেমে পড়েছিলেন সত্যজিৎ রায় থেকে ঋত্বিক ঘটক, শক্তি সামন্ত থেকে শক্তি চ্যাটুজ্জে। সেহেন শৈলশহরে ভ্রমণের পূর্বে জেনে নেওয়াই যায় এ নামের মানে। দার্জিলিং নামের বুৎপত্তি নাকি তিব্বত শব্দ দোর্জে বা দেবতা ইন্দ্রের বজ্রদণ্ড ও লিং বা স্থান বা দেশ শব্দ দুটি থেকে।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস: সংক্ষিপ্ত ইতিহাস পুঁথি ঘেঁটে জানা যায়, উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত সিকিম রাজ্যের অন্তর্গত ছিল এই পাহাড়িয়া অঞ্চল। ১৭৮০ সালে দার্জিলিং-র দখল নিয়ে নাকি নেপালিদের সঙ্গে সিকিম সেনাবাহিনীয় যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধে সিকিমের হার সুনিশ্চিত দেখে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রবল ইংরেজ। নেপালিদের যুদ্ধে হারায় ব্রিটিশ। এলাকার দখলও নেয় তারা। এরপর বহু ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ১২৩৪ বর্গ মাইল এলাকা নিয়ে জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে দার্জিলিং-র। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর দার্জিলিং পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। হিমালয়ের মহাভারত শৈলশ্রেণির অন্তর্গত দার্জিলিং সমতল থেকে ৭১০০ ফুট বা ২১৬৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। কীভাবে যাবেন কীভাবে যাবেন ‘হাত বাড়ালেই তো দার্জিলিং’, এমনটা যাঁদের মনে হয়, তাদের জন্য খোলা রয়েছে সড়ক, রেল ও আকাশপথ। শিয়ালদহ বা হাওড়া থেকে উত্তরবঙ্গমুখী যে কোনও ট্রেন ধরে প্রথমে পৌঁছতে হবে নিউ জলপাইগুড়ি জংশনে। সেখান থেকে ছোট গাড়িতে পাহাড়ি পথে আশি কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করার রোমাঞ্চই আলাদা।
কলকাতা থেকে বাস কিংবা আকাশ পথেও শিলিগুড়ি পৌঁছনো এখন মুখের কথা। সেখান থেকে টয় ট্রেনে পাহাড় কেটে শৈলশহরে পৌঁছতে চান অনেকে। একবার পৌঁছলে সব ভুলে সেখানেই পড়ে থাকতে মন চাইবে। অনুপম কাঞ্চনজঙ্ঘা, টাইগার হিল, চা বাগান, মেঘের পালক, তিস্তায় হারিয়ে কেটে যাবে সময়। মুছে যাবে রাগ-দুঃখ-বিদ্বেষ। জাপানিজ টেম্পল এবং পেস প্যাগোডা জাপানিজ টেম্পল এবং পেস প্যাগোডা হোটেল যদি দার্জিলিং-র প্রাণকেন্দ্রে হলে তো আর কথাই নেই। সেখান থেকে গাড়িতে দশ মিনিটের পথ পেরোলেই পৌঁছে যাওয়া যায় সুদৃশ্য জাপানি টেম্পলে। এক জাপানি সাধুর অর্থানুকুল্যে বৌদ্ধ মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছিল বলে শোনা যায়। মন্দিরের সিঁড়ি দিয়ে কিছুটা ওপরে রয়েছে ওই জাপানি সাধুর মূর্তি। এর পাশেই থাকা পেস প্যাগোডা নীরবতা ও শান্তির ধারক ও বাহক। ঘুম মনেস্ট্রি ঘুম মনেস্ট্রি টাইগার হিল যাওয়ার পথে ঘুম শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থান করা এই মনেস্ট্রিতে যেতে হলে মূল রাস্তা থেকে পাহাড়ের খাদ বেয়ে কিছুটা নিচে নামতেই হবে। বিশালাকার বৌদ্ধমন্দির এই মনেস্ট্রির অন্যতম আকর্ষণ। যেখানে রাজেশ খান্নার জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমা আরাধানার শ্যুটিং হয়েছে বলে শোনা যায়। রক গার্ডেন রক গার্ডেন দার্জিলিং-র প্রাণকেন্দ্র থেকে তিন হাজার ফুট নিচে নামলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে বাহারি ঝর্না ও তার সংলগ্ন বাগানে। পাহাড় কেটে তৈরি করা ওই বাগানের প্রতি ধাপে রয়েছে রঙিন সৌন্দর্য্য। চাইলে নেপালি পোষাকে ছবি তোলা যেতে পারে এই স্থানে। তেনজিং রক তেনজিং রক এভারেস্ট জয়ী পর্বতারোহী নেপালি শেরপা তেনজিং নোরগের স্মরণে এক পাথরের নামকরণ করা হয়েছে এখানে। আকারে ছোট হলেও উঁচু পাহাড়ের মতোই তার দম্ভ। কেবল কার কেবল কার দুই পাহাড়ের মধ্যেকার সুদীর্ঘ খাদ অতিক্রমের জন্য রয়েছে রোপওয়ে। তেনজিং রক পেরিয়ে উঠতে হবে ওই কেবল কারে। তাতে চড়ে এক মাথা থেকে অন্য মাথায় পৌঁছতে সময় লাগে পাক্কা ১৫ মিনিট। সুদৃশ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, ঘন সবুজ বন সঙ্গী পথিমধ্যে। তবে অনির্দির্ষ্টকালের জন্য সেটি বন্ধ হয়ে রয়েছে। এভাবেই শুরু। তবে প্রথম দিন এটুকু দেখে ক্লান্ত হয়ে হোটেলে ফিরে এলে ক্ষতি একটাই যে দ্বিতীয় দিনে বাড়তে পারে পরিশ্রম। কারণ এখনও বাকি অনেকটাই। মেঘের কোলে আরও মায়াবী হয়ে উঠতে পারে দার্জিলিং।
কলকাতা থেকে বাস কিংবা আকাশ পথেও শিলিগুড়ি পৌঁছনো এখন মুখের কথা। সেখান থেকে টয় ট্রেনে পাহাড় কেটে শৈলশহরে পৌঁছতে চান অনেকে। একবার পৌঁছলে সব ভুলে সেখানেই পড়ে থাকতে মন চাইবে। অনুপম কাঞ্চনজঙ্ঘা, টাইগার হিল, চা বাগান, মেঘের পালক, তিস্তায় হারিয়ে কেটে যাবে সময়। মুছে যাবে রাগ-দুঃখ-বিদ্বেষ। জাপানিজ টেম্পল এবং পেস প্যাগোডা জাপানিজ টেম্পল এবং পেস প্যাগোডা হোটেল যদি দার্জিলিং-র প্রাণকেন্দ্রে হলে তো আর কথাই নেই। সেখান থেকে গাড়িতে দশ মিনিটের পথ পেরোলেই পৌঁছে যাওয়া যায় সুদৃশ্য জাপানি টেম্পলে। এক জাপানি সাধুর অর্থানুকুল্যে বৌদ্ধ মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছিল বলে শোনা যায়। মন্দিরের সিঁড়ি দিয়ে কিছুটা ওপরে রয়েছে ওই জাপানি সাধুর মূর্তি। এর পাশেই থাকা পেস প্যাগোডা নীরবতা ও শান্তির ধারক ও বাহক। ঘুম মনেস্ট্রি ঘুম মনেস্ট্রি টাইগার হিল যাওয়ার পথে ঘুম শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থান করা এই মনেস্ট্রিতে যেতে হলে মূল রাস্তা থেকে পাহাড়ের খাদ বেয়ে কিছুটা নিচে নামতেই হবে। বিশালাকার বৌদ্ধমন্দির এই মনেস্ট্রির অন্যতম আকর্ষণ। যেখানে রাজেশ খান্নার জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমা আরাধানার শ্যুটিং হয়েছে বলে শোনা যায়। রক গার্ডেন রক গার্ডেন দার্জিলিং-র প্রাণকেন্দ্র থেকে তিন হাজার ফুট নিচে নামলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে বাহারি ঝর্না ও তার সংলগ্ন বাগানে। পাহাড় কেটে তৈরি করা ওই বাগানের প্রতি ধাপে রয়েছে রঙিন সৌন্দর্য্য। চাইলে নেপালি পোষাকে ছবি তোলা যেতে পারে এই স্থানে। তেনজিং রক তেনজিং রক এভারেস্ট জয়ী পর্বতারোহী নেপালি শেরপা তেনজিং নোরগের স্মরণে এক পাথরের নামকরণ করা হয়েছে এখানে। আকারে ছোট হলেও উঁচু পাহাড়ের মতোই তার দম্ভ। কেবল কার কেবল কার দুই পাহাড়ের মধ্যেকার সুদীর্ঘ খাদ অতিক্রমের জন্য রয়েছে রোপওয়ে। তেনজিং রক পেরিয়ে উঠতে হবে ওই কেবল কারে। তাতে চড়ে এক মাথা থেকে অন্য মাথায় পৌঁছতে সময় লাগে পাক্কা ১৫ মিনিট। সুদৃশ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, ঘন সবুজ বন সঙ্গী পথিমধ্যে। তবে অনির্দির্ষ্টকালের জন্য সেটি বন্ধ হয়ে রয়েছে। এভাবেই শুরু। তবে প্রথম দিন এটুকু দেখে ক্লান্ত হয়ে হোটেলে ফিরে এলে ক্ষতি একটাই যে দ্বিতীয় দিনে বাড়তে পারে পরিশ্রম। কারণ এখনও বাকি অনেকটাই। মেঘের কোলে আরও মায়াবী হয়ে উঠতে পারে দার্জিলিং।