*পাবনা ও সিরাজগঞ্জকে টার্গেট
*চাহিদা ৮ লাখ ৯ হাজার
*উৎপাদন ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৩৩৪টি
নাজমুল হোসেন
চট্টগ্রাম: আসন্ন ঈদুল আযহায় চট্টগ্রামে ৫২ হাজারের মতো কোরবানির পশু ঘাটতি আছে। ঘাটতি মেটাতে পাবনা ও সিরাজগঞ্জকে টার্গেটে রেখে প্রস্তুতি চলছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ অধিপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, গেলবার শেষের দিকে চট্টগ্রামের কোরবানি বাজারে যখন টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল ঠিক সেই মুহূর্তে রাজশাহীর সিরাজগঞ্জ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার গরু এনে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়েছিল।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, গেলবার কোরবানিতে ৮৫ হাজার গরু চট্টগ্রামে আসার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতিতে সেই গরু বিক্রি হয় কি না, বা চট্টগ্রামে ঢোকার অনুমতি পাওয়া যায় কি না— বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে ব্যবসায়ীরা আসেনি। ৮৫ হাজারের জায়গায় মাত্র ১০ হাজার গরু এসেছিল। পরে ৩৫ হাজার গরু সিরাজগঞ্জ থেকে আনা হয়েছিল।
চট্টগ্রামে এবারের বাজারে সম্ভাব্য কোরবানি পশুর চাহিদা ৮ লাখ ৯ হাজার। যার বিপরীতে আনোয়ারা, সাতকানিয়া, ফটিকছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলা মিলে চট্টগ্রাম জেলায় স্থানীয় মজুত ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৩৩৪টি। যার মধ্যে গবাদি পশু আছে ৫ লাখ ১০ হাজার ৪০টি, মহিষ আছে ৬৩ হাজার ১৩৬টি, ছাগল ও ভেড়া আছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৩টি ও অন্যান্য পশু আছে ৯৫টি।

প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ৫ বছরে চট্টগ্রাম জেলার বছর ওয়ারী পশু জবাই ও উৎপাদনের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৫ সালে চট্টগ্রামের স্থানীয় উৎপাদন ছিল ৩ লাখ ২০ হাজার। জবাই হয়েছে ৪ লাখ ৯২ হাজার ২৫০টি পশু। ২০১৬ সালে স্থানীয় উৎপাদন ছিল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ১১৯টি। এর বিপরীতে জবাই হয়েছে ৫ লাখ ১৬ হাজার ৮৫২টি। ২০১৭ সালে স্থানীয় উৎপাদন ছিল ৩ লাখ ৫৬ হাজার ১৬৩টি। আর জবাই হয়েছে ৫ লাখ ৯৫ হাজার ৮৩১টি।
২০১৮ সালে স্থানীয় উৎপাদন ছিল ৫ লাখ ৮১ হাজার ৬৩৪টি। জবাই হয় ৬ লাখ ৫৫ হাজার। ২০১৯ সালে স্থানীয় উৎপাদন ৬ লাখ ১০ হাজার ২১৯টি। জবাই হয়েছে ৭ লাখ ৩০ হাজার ৭৮৯টি। ২০২০ সালে স্থানীয় উৎপাদন ৬ লাখ ৮৯ হাজার ২২টি।
প্রতিবছর স্থানীয় উৎপাদনে ঘাটতি থাকার কারণে অন্য জেলা থেকে আনা হয় কোরবানির পশু। তবে রাজশাহী খুলনার সীমান্তবর্তী এলাকায় করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় কোরবানি পরিস্থিতিতে কেমন হবে— তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, কোরবানির আরও কিছুদিন বাকি আছে। আমরা আশা করছি, কোরবানির আগ মুহূর্তে পরিস্থিতি ভালো হতে পারে। জীবন-জীবিকা দুটোই বাঁচাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে ৫২ হাজারের মতো কোরবানির পশু ঘাটতি আছে। আমাদের নাটোর ও কুষ্টিয়ার গরু প্রয়োজন নেই। এবার সিরাজগঞ্জ থেকে গরু এলে ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে। তাছাড়া বেপারিরা বাঁচতে চায়। পাবনা থেকে তো ৩০-৪০ হাজার গরু এমনিতেই আসে। যেখান থেকেই আসুক।