বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম অঞ্চলে চা উৎপাদনে ধস নেমেছে। জানুয়ারি-অক্টোবর সময়ে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৭ শতাংশ উৎপাদন পিছিয়ে রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালের জানুয়ারি-অক্টোবর ১০ মাসে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছিল ৬.৩৩ শতাংশ । পরিমান ছিল ১০ লাখ ৭৪ হাজার কেজি। আর চলতি বছর একই সময়ে আরও হ্রাস পেয়ে কমেছে ১৫ লাখ ২৭ হাজার কেজি।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২২টি বাগানের মধে্য দাঁতমারা বাদে অন্য ২১টির পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। তাতে দেখা যায় যে আগুনিয়া, এলাহি নূর এবং বারমাসিয়া ছাড়া অপর ১৮ টি গত বছরের তুলনায় বেশ পিছিয়ে।
বাগান নির্বাহীরা জানান, এ বছর আবহাওয়া ছিল চা উৎপাদনের প্রতিকূলে। প্রধানত এ কারণে প্রত্যাশিত ফলন মেলেনি। মেঘলা আকাশে সূর্যতাপ পায়নি বাগানগুলো। লাল মাকড়সার সংক্রমণ ছিল। এসবের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বাংলাদেশ টি এসোসিয়েশনের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, এবারে জানুয়ারি-অক্টোবর সময়ে উৎপাদিত হয়েছে ৭৫ লাখ ৫৫ হাজার কেজি। কেবল অক্টোবর মাসে গত বছরের তুলনায় উৎপাদন কমেছে ১ লাখ ৪৬ হাজার কেজি। গত বছরে জানুয়ারি-অক্টোবর সময়ে উৎপাদিত হয়েছিল ৯০ লাখ ৮২ হাজার কেজি। ২০১৯ সালে তা ছিল ৯৪ লাখ ৪৪ হাজার কেজি।
বাগান নির্বাহীরা জানান, কখনও অনাবৃষ্টি, কখনও অতিবৃষ্টি এবং পর্যাপ্ত রোদ না থাকায় প্রত্যাশিত চা তৈরি হয়নি। এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাতা তোলা হয়। তবে, সবচেয়ে বেশি হয় জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। চয়নের ভর মওসুম এই ৪ মাস। আবহাওয়ার বিরূপ আচরণ চা শিল্পের জন্য দফায় দফায় হুমকি হয়েছে । তাতে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে।
বাংলাদেশ টি এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম শাখার তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চট্টগ্রাম অঞ্চলে বাগানসমূহের মধ্যে আগুনিয়া, বারমাসিয়া, এলাহিনূরে জানুয়ারি-অক্টোবর সময়ে উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। বারমাসিয়ায় ১০.৮৬ শতাংশ, আগুনিয়ায় ৫ শতাংশ এবং বারমাসিয়ায় ২.৫৪ শতাংশ উৎপাদন বেড়েছে।
অপর ১৮ টি বাগানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা মা-জান বাগানে। উৎপাদন কমেছে ৩৭.৪৩ শতাংশ। মোট চা হয়েছে ৯৪,৫০৬ কেজি। গত বছরে একই সময়ে হয়েছিল ১ লাখ ৫১ হাজার কেজি।
বরাবর এগিয়ে থাকা হালদা-ভ্যালিতে এক লাফে উৎপাদন কমে গেছে ২০ শতাংশের বেশি। গত বছরের জানুয়ারি-অক্টোবর সময়ে চা তৈরি হয়েছিল ৮ লাখ ৬২ হাজার কেজি। এবারে হয়েছে ৬ লাখ ৮৬ হাজার কেজি।
একই মালিকানাধীন রামগড় বাগানে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৩২ শতাংশ। ৪ লাখ ৫৪ হাজার কেজি চা হয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তা ২ লাখ ১২ কেজি কম।
আয়তনের দিক থেকে এশিয়ার বৃহত্তম বাগান কর্ণফুলী টি এস্টেট উৎপাদন পিছিয়ে আছে প্রায় ২৫ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট উৎপাদন ১১ লাখ ৩৬ হাজার কেজি। গত বছরে একই সময়ের তুলনায় তা ৩ লাখ ৭৯ হাজার কেজি কম।
পঞ্চবটি টি এস্টেট গত বছরে যেখানে অক্টোবর পর্যন্ত ২ লাখ ৭৬ হাজার কেজি উৎপাদন করে, সেখানে এবারে তা ২ লাখ ১৪ হাজার কেজি কেজি। অর্থাৎ প্রায় ২২.৪৮ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে।