বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতংকের মুখে দাবি উঠেছে সিটি নির্বাচন স্থগিত করার। তবে, এখন পর্যন্ত যে অবস্থা তাতে সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৯ মার্চ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নগরবাসী একজন নতুন মেয়র পেতে যাচ্ছেন এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে। এই প্রেক্ষাপটে চট্টগ্রামের মানুষ কর্পোরেশনের কতটুকু সেবা পেয়েছেন চলছে তার চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ।
বিগত নির্বাচনের আগে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন তাঁর পরিকল্পনা সম্পর্কে নগরবাসীকে জানিয়েছিলেন ইশতেহারে। সেটা এখন মিলিয়ে দেখছেন নগরীর মানুষ। উল্লেখযোগ্য সেবা পাওয়া যায়নি এমনটি বলার অবকাশ নেই। তবে,বলা যায় যে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে যেসব সুবিধা পাওয়ার ছিল তার অনেকটাই পাওয়া যায়নি। নিউমার্কেটসহ বহু এলাকায় ফুটপাত দখল, যেখানে সেখানে দিনের পর দিন নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রেখে জনজীবনে দুর্ভোগ তৈরি, নালা-ফুটপাত দখলে নিয়ে দোকান-পাট নির্মাণ ইত্যাদিতে নগরবাসী কম অসন্তুষ্ট নন।
নগরীতে অনেক সংস্থা অনেক রকম কাজ করছে। কিন্তু নগরীর যাবতীয় দায়ভার নগরপিতার। অবশ্য, মেয়রের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা আছে। অনেক সেবা সংস্থা জড়িত উন্নয়ন কার্যক্রমের সাথে। সবগুলোকে এক জায়গায় এনে ‘সিটি গভর্ণমেনট’ চালু করার দাবি তুলেছিলেন প্রথম নির্বাচিত মেয়র মরহুম আলহাজ এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে অনেক। তবে, কোন অগ্রগতি নেই।
আগামী মেয়রের কাছে প্রত্যাশা কি এই নিয়ে ৩ শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিজনেসটেুডে২৪ প্রতিনিধির কাছে।
স্মার্ট সিটি চাই : মাহবুবুল আলম
চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বললেন, সারাদেশের অর্থনীতি আবর্তিত হয় চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে।সরকার উন্নয়ন বরাদ্দের প্রায় ৩৫ শতাংশ দিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রামে। এসব বিবেচনায় উপযোগী করে তুলতে হবে চট্টগ্রাম নগরীকে। ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে আমার আশা করি নতুন মেয়র চট্টগ্রামকে একটি ‘স্মার্ট সিটি’, আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলবেন, যাবতীয় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবেন। নগরী হবে যানজট ও জলজট মুক্ত।সেই লক্ষ্যে অবকাঠামোগত আরও ব্যাপক উন্নয়ন প্রয়োজন। নগরীকে জঞ্জালমুক্ত রাখাটা সম্পূর্ণভাবে মেয়রের আন্তরিকতা ও নীতিনিষ্ঠার ওপর নির্ভর করে বলে উল্লেখ করেন মাহবুবুল আলম।
চাই ‘বেটার চট্টগ্রাম’- আবদুস সালাম
বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবদুস সালাম বললেন, প্রত্যাশা ‘বেটার চট্টগ্রাম’-এর। আর সিটি কর্পোরেশনের ওপর যেসব দায়িত্ব নির্ধারিত সেগুলো যথাযথ পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হলে সম্ভব বেটার চট্টগ্রাম গড়ে তোলা। একজন মেয়রকে যেসব ক্ষমতা দেয়া আছে তার মধ্যে থেকেই যাবতীয় নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা যায়। বিশেষত অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো, যানজট নিরসন, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, শিক্ষা খাতে আরও উন্নয়ন প্রয়োজন।
বাসযোগ্য নগরী চাই: আবুল বশর চৌধুরী
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক, বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, নতুন মেয়র পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তোলার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন বলেন প্রত্যাশা আমার। চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী। এটার কথার কথা। এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে যা যা হওয়া প্রয়োজন সব করতে সচেষ্ট হবেন নতুন মেয়র সেই প্রত্যাশা।
বললেন, সবকিছু এখনও রাজধানীকেন্দ্রিক। ফাইল নিয়ে দৌড়াতে হয় ঢাকা। ভাল চিকিৎসা, শিক্ষার জন্য ঢাকা। চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি বিভিন্ন দেশে যাওয়া যায় না। এর জন্যও ঢাকার ওপর নির্ভরতা। অন্ততপক্ষে কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রামে করা, উন্নত চিকিৎসা ও শিক্ষা ব্যবস্থা চট্টগ্রামে গড়ে তোলার ব্যাপারে আগামীর নগরপিতা উদ্যোগ নেবেন বলে আশা করেন আবুল বশর চৌধুরী।