শামসুল ইসলাম
জাহাজ সংকটে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। রপ্তানি পণ্য পরিবহনে জটিলতা নিরসনে চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে যুক্ত হচ্ছে নতুন পাঁচটি কন্টেইনার জাহাজ। গত সোমবার বন্দর ও স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব জাহাজ পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর সূত্র জানায়, অনুমতিপ্রাপ্ত জাহাজগুলোর মধ্যে রয়েছে মেডিটেরানিয়ান শিপিং কোম্পানি লিমিটেডের (এমএসসি) জাহাজ ‘ওইএল ইন্ডিয়া’ ও ‘হারম্যান স্কেপার’, এভার বেস্ট শিপিং লাইনের ‘কন্টশিপ লেক্স’ ও ‘মিনিয়ন’ এবং সি কনসোর্টিয়ামের ‘এক্সপ্রেস যমুনা’।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম বলেন, রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ সংকট নিরসনে সোমবার বন্দর ও স্টেক হোল্ডারদের জরুরি বৈঠকে চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে নতুন কন্টেইনার জাহাজ পরিচালনার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে মোতাবেক সংশ্লিষ্টদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার ও মঙ্গলবার দুটি করে ও বুধবার একটি জাহাজকে অনুমতি দেওয়া হয়।
তিনি জানান, অনুমতিপ্রাপ্ত জাহাজগুলোর মধ্যে এভার বেস্ট শিপিং লাইনের ‘কন্টশিপ লেক্স’ জাহাজটি সোমবার কলম্বো থেকে পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। একই শিপিং লাইনের অপর জাহাজ ‘মিনিয়ন’ গতকাল দুবাই থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। মেডিটেরানিয়ান শিপিং কোম্পানির দুটি জাহাজ আগামী সপ্তাহে পণ্য পরিবহন শুরু করবে। তবে নতুন অনুমোদনপ্রাপ্ত এক্সপ্রেস যমুনা জাহাজটি কবে নাগাদ পণ্য পরিবহনে যুক্ত হবে তা এখনো জানানো হয়নি।
বিজিএমইএ সূত্র জানায়, সিঙ্গাপুর, কলম্বো, পোর্ট কেলাংসহ বিভিন্ন ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরে জটের প্রভাবে জাহাজ সংকটে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে যথাসময়ে রপ্তানি পণ্য শিপমেন্ট নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে বেসরকারি ডিপোগুলোতে রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনার জট সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন কারখানা থেকে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানযোগে পাঠানো রপ্তানি পণ্যগুলো অফডকে আন স্টাফিংয়ের জন্য গাড়িগুলোকে ৮-১০ দিন ডিপো গেটে লাইন ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে গত সোমবার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও স্টেক হোল্ডারদের মধ্যে জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে সংকট উত্তরণে ৭ দফা সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে অন্যতম জাহাজ সংকট কাটাতে চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে পণ্য পরিবহনে নতুন জাহাজের অনুমোদন দেওয়া। ওই দিনের বৈঠকেই একাধিক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে জাহাজ পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, রপ্তানি পণ্য পরিবহনে বিদেশি ক্রেতা কর্তৃক শিপিং কোম্পানি মার্কস লাইনের কাছে অতিরিক্ত বুকিং দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা পরিবহনে এই শিপিং কোম্পানির পর্যাপ্ত ফিডার ভেসেল না থাকায় রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। ওই রুটে পণ্য পরিবহনে নতুন করে জাহাজ পরিচালনার অনুমোদন সংকট উত্তরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বিভিন্ন বেসরকারি ডিপোতে জমে থাকা পণ্যবাহী কন্টেইনারের ৭০ শতাংশই মার্কস লাইনের। কিন্তু সিঙ্গাপুর বন্দরে জাহাজজটের কারণে তারা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনার পরিবহনে সংকটে পড়েছে। ফলে রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণে এই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
-দেশ রূপান্তর