বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: মর্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার চাপে ইরানের চাবাহার বন্দর ব্যবহার নিয়ে বিপাকে পড়েছে ভারত। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারত বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
ইরানের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক ‘আদায় কাঁচকলা’য়। যুক্তরাষ্ট্রের লাল চোখ উপেক্ষা করে লাগাতার সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেছে তেহরান। ইরানের উপর বিপুল আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা।
পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী ইরানের দক্ষিণাংশে চাবাহার বন্দরটি নির্মাণ করেছে নয়াদিল্লি। ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এতদিন সেখানে কর্মকাণ্ডের জন্য ভারতকে ছাড় দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন তা প্রত্যাহার করেছে ।
এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছে ওয়াশিংটন। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইরানের উপর আর্থিক চাপ বৃদ্ধি করতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে তারা।
কৌশলগত দিক থেকে চাবাহার বন্দরের গুরুত্ব ভারতের কাছে অপরিসীম। এর সাহায্যেই মধ্য এশিয়ায় বাণিজ্য করে থাকে ভারত। চাবাহারের রাস্তায় আফগানিস্তান থেকে শুরু করে উজ়বেকিস্তান, এমনকি রাশিয়া পর্যন্ত পণ্য পরিবহণ চালাচ্ছে নয়াদিল্লি। মধ্য এশিয়ায় ভারতীয় পণ্য পৌঁছনোর পথে সবচেয়ে বড় বাধা হল পাকিস্তান। এশিয়া মাইনর ও ভারতের মাঝে অবস্থান হওয়ায় এই সুবিধা এত দিন ভোগ করে আসছিল ইসলামাবাদ। ফলে পণ্য পরিবহণের জন্য কতকটা বাধ্য হয়েই ইরানকে বেছে নেয় নয়াদিল্লি।
চাবাহার বন্দর নির্মাণের জেরে পাকিস্তানকে এড়িয়ে মধ্য এশিয়ায় সদ্য বাণিজ্য শুরু করেছিল ভারত। এ ক্ষেত্রে ইরানকে ব্যবহার করলেও আমেরিকার নিশেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হচ্ছিল না নয়াদিল্লিকে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন সেই নীতি বদল করায় চরম দুশ্চিন্তায় ভারত। চাবাহার বন্দরে বিশাল বিনিয়োগ ভারতের। গত বছর সংশ্লিষ্ট বন্দরটি নিয়ে তেহরানের সঙ্গে ১০ বছরের একটি চুক্তি করে নয়াদিল্লি। সেখানে বন্দরটির উন্নতিতে বহু কোটি টাকা লগ্নির কথা বলা আছে।
চাবাহার এলাকার পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্য ২৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা রয়েছে ভারতের। ২০১৮ সাল থেকে সমুদ্র বন্দরটিকে নিয়ন্ত্রণ করছে ‘ইন্ডিয়া পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড’ বা আইপিজিএল নামক সংস্থা।
চাবাহার বন্দর ব্যবহারের ব্যাপারে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি করেছে নয়াদিল্লি। সেখানে ভারত ও ইরান ছাড়াও রয়েছে আফগানিস্তান। আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি বদলের জেরে থমকাতে পারে চাবাহারের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ।
আমেরিকার নতুন নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, ইরানকে দেওয়া যে কোনও আর্থিক ত্রাণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে চাবাহার বন্দর প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলিও অন্তর্ভুক্ত।