হিলি ( দিনাজপুর ) থেকে মোঃ নুরুজ্জামান হোসেন: দেশের বাজারে চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানি শুল্ক কমানোয় ও বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির অনুমতি দেওয়ায় আবারো দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে।
শনিবার (২৩জুলাই) দুপুরে চাল বোঝাই তিনটি ট্রাক প্রবেশের মধ্য দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। ট্রাক ৩টিতে অসিদ্ধ আতপ চাল রয়েছে। নওগাঁর এ কে ট্রেডিং আমদানিকারক।
গেল বছর ৩১ আগস্ট থেকে হিলি দিয়ে সকল প্রকার চাল আমদানি বন্ধ ছিল। চালের দাম বেশি হওয়ায় আবারো সরকার আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। আজ তিনটি ট্রাকে প্রথম চালের চালান বন্দরে প্রবেশ করে।
এদিকে হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে গুটি স্বর্ণা-৫ -৪৬ টাকা, বিআর২৯ -৪৬ টাকা, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, বিআর-২৮,.৫৬ টাকা, সম্পা কাটারি-৬৬ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে।
চাল ব্যবসায়ী সামসুল ইসলাম বলেন,দীর্ঘ দিন ধরে ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ ছিল। এ কারণে দামে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। তবে ভারতীয় চাল আমদানি অব্যাহত থাকলে দাম কমতে পারে।
সিএন্ডএফ এজেন্ট রাশেদুল ইসলাম বলেন, আজ ভারত থেকে অসিদ্ধ আতপ চাল দেশে প্রবেশ করেছে। প্রতিটন চাল ৩শ মার্কিন ডলার মূল্যে আমদানি করা হয়েছে। আগামীকাল কাগজপত্র পেলে কাস্টমসে বিলঅবএন্ট্রি সাবমিট করা হবে। এর পরে পরীক্ষণ শুল্কায়ন করে শুল্ক পরিশোধ স্বাপেক্ষে এসব চাল খালাস করে নেওয়া হবে।
তবে চাল আমদানিতে পড়তা না থাকার কারণে বন্দর দিয়ে তেমন একটা চাল দেশে প্রবেশ করার সম্ভাবনা নেই বলে আমদানিকারকরা আমাদের জানিয়েছেন।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, চাল আমদানিতে বাড়তি শুল্ক আরোপ থাকায় গত ৩১ আগস্ট থেকে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ ছিল। সম্প্রতি সরকার চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে নতুন করে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়ার ফলে দীর্ঘ দশ মাসের বেশি সময় পর আজ থেকে আবারো বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম নুরুল আলম খান বলেন, চাল আমদানিতে ৬২.৫ ভাগ শুল্ক আরোপ থাকায় বন্দর দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে নন-বাসমতি চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে মাঝে মধ্যে বন্দর দিয়ে বাসমতি চাল আমদানি হচ্ছিল। সম্প্রতি সরকার চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে রেয়াতি হারে চাল আমদানির সুযোগ দিয়েছেন এক্ষেত্রে চালের আমদানি শুল্ক ২৫ ভাগ রয়েছে। তবে শুধুমাত্র যারা সরকারের নিকট থেকে চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছেন তারাই এই শুল্কে চাল আমদানি করতে পারবেন। আর অন্য কেউ চাল আমদানি করলে তাকে ৬২.৫ভাগ শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমুল্য নিশ্চিত করতে গতবছরের ৩১ আগস্ট চালের আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে দেয় সরকার। ওই সময় থেকে ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ ছিল। সম্প্রতি দেশে চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে বাজার নিয়ন্ত্রনে চালের আমদানি শুল্ক ৬২.৫ ভাগ থেকে কমিয়ে ২৫ভাগ নির্ধারণ করে দেয় সরকার। সেই সাথে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির জন্য গত ৩০ জুন প্রথম ধাপ ও পরবর্তীতে আরো কয়েক ধাপে সারাদেশের ৩৮০ জন আমদানিকারককে কয়েকলাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়। এর মধ্যে হিলি স্থলবন্দরের ১০ জন আমদানিকারক ৩০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি পায়।