- এ বছর চা-শিল্পে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল: কাজী ইরফান উল্লাহ
- চা শিল্পের ইতিহাসে এত দীর্ঘ ধর্মঘট নজিরবিহীন: জাহাঙ্গীর আলম
নিজাম উদ্দিন লাভলু
রামগড়: টানা ১১ দিন শÌমিক ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রামের ২১ টি বাগানে পাতা না ছেঁড়ায় তা আগাছার মত লম্বা হয়ে গেছে। বড় ও শক্ত হয়ে গেছে চা গাছের পাতা। পরিপক্ক হয়ে গেছে মূল কুঁড়ি। বাগান কর্তৃপক্ষ জানায়, ২১টি বাগানে দৈনিক প্রায় ৪ লক্ষ কেজি সবুজ চা পাতা সংগ্রহ হয়নি। ফলে এ পাতা গাছেই নষ্ট হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ৪ কেজি ৫০০ গ্রাম সবুজ চা পাতায় এক কেজি মেইড টি বা চা তৈরি হয়। এ হিসেবে ৪ লক্ষ কেজি সবুজ চা পাতায় ৯০ হাজার কেজি মেইড টি তৈরি হয়। নিলাম বাজারের দর অনুযায়ি এক কেজি চায়ের দাম ২২০ টাকা । এ হিসেবে চট্টগ্রামের ২১ টি বাগানেই দৈনিক ১৯ কোটি ৮ লক্ষ টাকার পাতা নষ্ট হয়।
ফটিকছড়ির নেপচুন চা বাগানের জি এম কাজী ইরফান উল্লাহ বলেন, এবছর চট্টগ্রামে চায়ের সুপার বাম্পার উৎপাদন হয়েছিল। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে সব শেষ। বাগানগুলোর অপূরণীয় ক্ষতি হলো। তিনি বলেন, গাছের পাতাগুলো অনেক বেড়ে গেছে। এগুলো আর হাতে তোলা যাবে না। এছাড়া এ পাতা দিয়ে ভালো চা হবে না। মানসম্পন্ন চা উৎপাদন করতে হলে এখন গাছের ওপরের পাতা ছেঁটে অপেক্ষা করতে হবে। নতুন কুঁড়ি এলে সেগুলো হবে চা তৈরির কাঁচামাল। তবে ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে গেলে মৌসুম শেষ হয়ে যাবে। তাই এ বছর চা-শিল্পে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল।’
রামগড় চা-বাগানের সিনিয়র ব্যবস্থাপক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি যেটি হয়েছে, সেটি হলো আমরা আমাদের পুরো প্লাকিং রাউন্ড থেকে পিছিয়ে গেছি। বিপুল পরিমাণ পাতা গাছেই নষ্ট হয়ে গেছে। পরিচর্যা বন্ধ থাকায় ক্ষতিকর পোকামাকড়ও আক্রমণ করেছে বাগানে।
বাংলাদেশ চা সংসদের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সারাদেশে একযোগে এত দীর্ঘদিন শÌমিক ধর্মঘটের নজির নাই। তিনি বলেন, এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চা মৌসুম গণণা করা হয়। তন্মধ্যে আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এ তিন মাস ভরা মৌসুম। আগস্টের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতেই চা মৌসুম থাকবে না। চট্টগ্রাম চা শÌমিক ইউনিয়নের চট্টগ্রাম ভ্যালির সভাপতি নিরঞ্জন নাথ মন্টু বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা এতেদিন শ্রমিক ধর্মঘট হয়নি। এতে চা শিল্পের বড় ধরণের ক্ষতি হওয়ার কথা জানান তিনি।