বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
চিনা জলসীমায় ভারতীয় নাবিক তথা জাহাজ কর্মীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ই নিষেধাজ্ঞার ফলে পণ্যবাহী জাহাজ থেকে কাজ হারাতে শুরু করেছে ভারতীয় নাবিক ও কর্মীরা।
ভারতীয় নাবিকদের চিনা বন্দরে প্রবেশের ওপর জারি করা এই নিষেধাজ্ঞার সরকারি নয়। অল ইন্ডিয়া সিফারের এন্ড জেনারেল ওয়ার্কার ইউনিয়ন এই বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ এবং জল পরিবহন মন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়ালকে চিঠি দিয়েছে। সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, চিনের জলসীমার মধ্যে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না ভারতীয় নাবিক এবং জাহাজের অন্য কর্মীদের। এর ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্তত ২১ হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে।
সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, এটি চিনের একটি নতুন কৌশল। ভারতীয় নাবিক এবং জাহাজ কর্মীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে নিজেদের নাবিক এবং জাহাজ কর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে চাইছে চিন। কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রককে বিষয়টি খতিয়ে দেখার অনুরোধ করছি। বিষয়টিতে দ্রুত পদক্ষেপ করার অনুরোধ করছি। তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের শুরুতে এরকম সমস্যা সৃষ্টি করেছিল। ভারতীয় নাবিকরা থাকায় দুটি পণ্যবাহী বিদেশি জাহাজকে চিনের বন্দরে নোঙর করতে দেয়নি চিন। এর ফলে ৪০ জনের বেশি ভারতীয় ক্রুজ সদস্য কয়েক সপ্তাহ চিনে আটকে ছিলেন।
ন্যাশনাল শিপিং বোর্ডের সদস্য ক্যাপ্টেন সঞ্জয় পরাশর বলেছেন, চিন আসলে বিদেশী জাহাজ সংস্থাগুলির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। ভারতীয় ক্রুজ সদস্য থাকলে জাহাজগুলি চিনের বন্দর থেকে পণ্য ওঠাতে বা নামাতে পারবে না বলে অনৈতিক শর্ত চাপাচ্ছে। চিনের জলসীমায় প্রবেশ করতে হলে কোনও ভারতীয় নাবিক বা কর্মীকে জাহাজে রাখা যাবে না বলেও চাপ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে জাহাজগুলোকে পথ বদল করতে হচ্ছে। তাতে জ্বালানির খরচ অনেকটাই বাড়ছে। ফলে খরচ বাঁচাতে সংস্থাগুলিকে ভারতীয় নাবিক ও কর্মীদের ছাঁটাই করার পথে হাঁটতে হচ্ছে। পাঁচ সদস্যের ক্রুজ দল বদল করতে খরচ হয় ৩ -৫ লক্ষ ডলার। চিন আসলে দাদাগিরি করছে। একমাত্র কূটনৈতিক পথেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
বিশ্বব্যাপী পণ্যবাহী জাহাজের নাবিক ও কর্মীদের অধিকাংশই ভারতীয়। হিসেব বলছে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার ভারতীয় নাবিক ও অন্য কর্মী এই কাজে যুক্ত। যাদের মধ্যে ২.১ লাখ কর্মী কাজ করেন বিদেশি জাহাজ সংস্থায়। ভারতীয় সংস্থাতে কাজ করেন ৩০ হাজার ভারতীয়। চিনের এই চাপের ফলে মার্কিন এবং ইউরোপীয় জাহাজ সংস্থাগুলি ভারতীয় নাবিক ও কর্মীদের রাখতে চাইছে না। কারন তাতে তাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ভারতীয় নাবিক এবং কর্মীদের প্রবেশাধিকারের নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষেত্রে ভারতের করোনার ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউকে কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে চিন। করোনার ডেল্টা প্রজাতি আটকাতে এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে চিনা কর্তৃপক্ষ।