কুড়িগ্রাম থেকে নয়ন দাস: চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী অষ্টমী স্নান সম্পন্ন হয়েছে আজ। ব্রহ্মপুত্র স্নান উপলক্ষে তিনদিন ধরে সাজ রব।
‘হে মহান পরমেশ্বর ভগবান ব্রহ্মপুত্র নদী তীর হে লৌহিত্য, তুমি আমার পাপ মোছন কর’ মন্ত্র উচ্চারণ করে পূণ্যার্থীরা কৃপা চান ব্রহ্মার। স্নান উৎসবে মেতে উঠেন পূণ্যার্থীরা।
গত কয়েকদিন থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পূণ্যার্থীরা ভিড় জমিয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজারভিটা, পুটিমারী নদীর তীর, চিলমারী বন্দর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে।
নদী পথে ট্রলার ও নৌকা-যোগে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে পূণ্যার্থীরা উপস্থিত হন ব্রহ্মপুত্রের নদীর পাড়ে। উৎসব কমিটির নেতারা জানান, করোনার কারনে গত দু’বছরে উৎসব না হওয়ায় এবারে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুলসংখ্যক পূণ্যার্থী যোগ দিয়েছেন স্নান উৎসবে।
চিলমারী ফকিরের হাট ঘাট থেকে রাজার ভিটা পর্যন্ত শুরু হয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার ব্যাপী ব্রহ্মপুত্র নদে এই স্নানের আয়োজন করে চিলমারী উপজেলা প্রশাসন ও পূজা উদযাপন কমিটি। শুক্রবার রাত ৯.১১ টা থেকে শনিবার রাত ১১টা ৮ মিনিট অষ্টমী প্রহর থাকলেও স্নান করার উত্তম সময় ধরা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত। প্রায় ৫ লাখ পূণ্যার্থীর পদভারে মূখরিত হয়ে উঠেছিল চিলমারীর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা।
স্নান করতে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রীঃ নিতাই চন্দ্র দাস, শ্রীঃ সুবল চন্দ্র দাস’সহ অনেকে জানান, করোনার কারণে গত বছর অষ্টমির স্নান করতে পারিনি কিন্ত এবার শান্তি পূর্ণভাবে স্নান করতে পেরে আমরা আনন্দিত।
চিলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম জানান, প্রতি বছরের ন্যায় দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, চীনসহ অন্যান্য দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী পূণ্যার্থীগণ অষ্টমী স্নান মেলায় আসেন। এ বছর প্রায় ৫ লক্ষাধিক পূন্যার্থীর সমাগম ঘটেছে।
উপজেলা নির্বাহী মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি ভাবে অষ্টমী স্নান মেলা স্থলে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, বিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য নলকুপ স্থাপন, মহিলাদের কাপড় বদলানোর জন্য দু’শতাধিক তাবু টাঙ্গানো হয়। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভিডিপির পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করাসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থান গুলোতে পুলিশী পাহারার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।