নয়ন দাস,কুড়িগ্রাম: চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)-এর ফেরি চলাচল প্রায় ৩ মাস ধরে বন্ধ। নাব্যতা সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে ফেরি চলাচল।
বিআইডব্লিউটিসির মেরিন অফিসার মো. নজরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ফেরি চলাচলের জন্য ৬-৭ ফুট পানির গভীরতা প্রয়োজন । কিন্তু সেখানে ওই পরিমাণ গভীরতা নেই। বিআইডব্লিউটিএ’র টেকনিক্যাল টিম এসে অতিরিক্ত পলি জমার কারণে ড্রেজিং কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিআইডব্লিউটিএ নির্বাহী প্রকৌশলী সমির পাল বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের চ্যানেলটি পরিবর্তন হয় প্রতি বছর ডিসেম্বর-মার্চ মাস পর্যন্ত। এ কারণে ড্রেজিং করে কোনো সুফল না পাওয়ায় ড্রেজিং বন্ধ করা হয়েছে।
ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় প্রায় প্রতি মাসে সাড়ে ১২ লাখ টাকা গচ্ছা দিচ্ছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। পাশাপাশি ফেরির ইঞ্জিন ক্ষতির মুখে পড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে ফেরি বন্ধ থাকায় রৌমারী ফেরিঘাট দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের বালু ভর্তি ট্রাক্টর, ডাম্পার যাতায়াত করায় ঘাটটি নষ্ট হয়ে গেছে। এরমধ্যে ফেরি বন্ধ থাকায় আসন্ন ঈদুল ফিতরে ঘরেফেরা মানুষের ভোগান্তি এবং বাড়তি অর্থ খরচ হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উত্তরাঞ্চলের যানবাহনগুলো ১৫০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিয়ে যমুনা সেতু হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করে। ফেরিটি রমনা ঘাট থেকে ফকিরেরহাট ঘাটে স্থানান্তর করা হলে অনেক কম সময়ে এ অঞ্চলের বাস, ট্রাক, ছোট গাড়িগুলো পারাপার করে অল্প সময়ে ঢাকা যাতায়াত করতে পারবে। এতে যানবাহনের সময় এবং জ্বালানি খরচ অনেকাংশে কমে যাবে। এছাড়া নাইট নেভিগেশন ব্যবস্থা চালু থাকলে রাতে ফেরি চলাচল সম্ভব হবে বলে জানায় সূত্রটি।
বিআইডব্লিউটিসির চিলমারীর ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান বলেন, ২৩ ডিসেম্বর নাব্যতা সংকটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কদম এবং কুঞ্জলতা নামে দুটি ফেরি চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রাখা আছে। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক নৌরুটের প্রয়োজনীয় সমস্যা সমাধান করে ফেরি চলাচলের নির্দেশনা এলে সঙ্গে সঙ্গেই সার্ভিস চালু করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএ’র উপপরিচালক শেখ রবিউল ইসলাম বলেন, ওয়াটার লেভেল না বাড়া পর্যন্ত ফেরি চলাচল করা সম্ভব নয়। কেননা প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে ফেরি চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। তবে রৌমারীর ঘাট দিয়ে বালু যাওয়ার কারণে ঘাট নষ্ট হওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।