Home First Lead চীনা করোনাভাইরাসের ধাক্কা বিশ্ব শিপিং বাণিজ্যে

চীনা করোনাভাইরাসের ধাক্কা বিশ্ব শিপিং বাণিজ্যে

ছবি: সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: চীনে করোনাভাইরাসের কারণে মারাত্মক ধাক্কা লেগেছে বিশ্ব শিপিং বাণিজ্যে। বড় বড় শিপিং কোম্পানিগুলো তাদের জাহাজ চলাচল হ্রাস করেছে চীন রুটে।

বিশ্বের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ৮০ ভাগ হয় সমুদ্রপথে। আর বিশ্বের ব্যস্ততম ১০টি কন্টেইনার বন্দরের ৭টি চীনে। বৃহৎ অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীনের উহানে যে ঘাতক ব্যাধি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, তা কেবল সেখানে সীমিত নেই। আরও কয়েকটি দেশে প্রাদুর্ভাব হয়েছে। চীনা বিভিন্ন কোম্পানির কারখানা কর্মীরা বাসাবাড়ির বের হচ্ছেন না। কারখানাসমূহ বন্ধ। চীন থেকে বিভিন্ন দেশে শিল্প-কারখানার কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য পণ্য সরবরাহ প্রায় বন্ধ। বিশ্বের প্রায় সব দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে চীনের।

চীন থেকে যন্ত্রাংশ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় গাড়ি উৎপাদনকারি হুন্দাই ( এইচওয়াইএমটিএফ ) তাদের দক্ষিণ কোরিয়ার কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। আরও বিভিন্ন কোম্পানি অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হয়েছে চীন থেকে কাঁচামাল সরবরাহ বা চীনে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায়।

এ পরিস্থিতি মহা দুশ্চিন্তার কারণ হয়েছে বড় বড় শিপিং কোম্পানিসমূহের জন্য। চট্টগ্রামে শিপিং কোম্পানির নির্বাহীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মার্সক, এমএসসি, হ্যাপাগ লয়েড, সিএমএ সিজিএম জাহাজ চলাচল কমিয়ে দিয়েছে চীন, হংকং পথে। চীনে গেছে এমন জাহাজসমূহ বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরের বাইরে নোঙর করে রাখা হয়েছে। ভিড়তে পারছে না। সব নাবিক করোনাভাইরাস মুক্ত তা নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত এসব জাহাজের পণ্য খালাস বন্ধ থাকবে।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং সূত্রের খবর: চীনের বিভিন্ন বন্দরে জাহাজ প্রবেশ বন্ধ। সেখানে যাওয়া জাহাজগুলো ভাসমান কোয়ারেন্টাইন জোনে অপেক্ষমান। কার্যত চীনের বন্দর সমূহে এক ধরনের অচলাবস্থা। কর্মী সংকটে বন্ধ রয়েছে হ্যান্ডলিং কার্যক্রম। যেসব জাহাজ সাম্প্রতিককালে চীনে গেছে সেগুলো সিঙাপুর ও অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে আটকে পড়েছে। ভিড়ার অনুমতি দিচ্ছে না দেশ দু’টি।

 আন্তর্জাতিক শিপিং এসোসিয়েশন ‘বিমকো’র চিফ শিপিং এনালিস্ট পিটার স্যান্ড মনে করেন, করোনাভাইরাস সংকট যত দীর্ঘ হবে তত নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বিভিন্ন দেশে শিল্পোৎপাদনে। আর শিপিং বাণিজ্যে সংকটও তত দীর্ঘতর হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রতিমাসে কমপক্ষে ২০ টি জাহাজ আসে চট্টগ্রাম বন্দরে। চিটাগাং চেম্বারের এক পরিসংখ্যানে জানা যায়,  বাংলাদেশের মোট আমদানির ৩৫ শতাংশ চীন থেকে আমদানি হয়। সুতা, পোশাক শিল্পের কাপড়, খুচরা যন্ত্রাংশ এবং বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ইত্যাদি মিলিয়ে বছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি ডলারের আমদানি হয় সেখান থেকে। আর প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের পণ্য সেখানে রপ্তানি হয়।