Home Second Lead চেঙ্গী সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

চেঙ্গী সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শাকিল মন্ডল, রাঙামাটি:  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করলেন  নানিয়ারচর উপজেলার সঙ্গে সংযোগ প্রদানকারী চেঙ্গী সেতু। এতে ছয় দশকের দুঃখ ঘুচলো নানিয়ারচরসহ তিন উপজেলাবাসীর।

বুধবার (১২ জানুয়ারী) সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এই সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পার্বত্যাঞ্চলের সবচেয়ে দীর্ঘ এই সেতুর মাধ্যমে অল্প সময়ে রাঙামাটির লংগদু, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা হয়ে বাঘাইছড়ির সাজেকে পৌঁছানো যাবে। এরই মধ্যে সেতুটি ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রাঙামাটি জেলা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটকরা সেতুর পাশের অপরূপ দৃশ্য দেখতে ভিড় করছেন।

কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টির ৬০ বছর পর নির্মিত নানিয়ারচরের এই সেতুতেই স্বপ্ন বুনেছেন রাঙামাটির দুর্গম তিন উপজেলার মানুষ। চেঙ্গী নদীর ওপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ এই সেতু দিয়ে শুধু নানিয়ারচর উপজেলায় নয়, সহজেই যাওয়া যাবে লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলায়ও।

নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলি রহমান তিন্নি জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নানিয়ারচরের চেঙ্গী নদীর উপর নব-নির্মিত সেতুটি উদ্বোধন করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত সেতুর নাম দেওয়া হয়নি।

স্থানীয় বাজার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, স্বপ্নের সেতুটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্বোধন হওয়ায় আমাদের অনেক দিনের আকাঙ্ক্ষা পুরন হলো। এই সেতু উদ্ধোধনের ফলে পাহাড়ের যোগাযোগ ব্যবস্থার অভুতপূর্ব পরিবর্তন ঘটবে এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যেরও প্রসার ঘটবে। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘ হায়াত কামনা করেন।

নানিয়ারচর সেতু প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সেতুর নির্মাণের দায়িত্বে ছিলেন সেনাবাহিনীর ৩৪ ইসি ব্রিগেডের ২০ ইঞ্জিনিয়ার্স কনোস্ট্রকশন ব্যাটালিয়ন (ইসিবি)। ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৯.৮ মিটার প্রস্তের সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২২৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর সেতুর নির্মাণ শুরু হয়।

জানতে চাইলে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহে আরেফিন জানান, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে দীর্ঘ নানিয়ারচর সেতুটি আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্বোধনের ফলে উপজেলার মানুষের দীর্ঘ বছরের কষ্ট লাঘব হলো।’

উল্লেখ্য, রাঙামাটি থেকে বর্তমানে বাঘাইছড়িতে সড়ক পথে যেতে পারি দিতে হয় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পথ। রাঙামাটি থেকে সড়কপথে লংগদু যেতেও প্রায় ১৪০ কিলোমিটার পথ পারি দিতে হয়। সময়টাও লাগে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা। এই উপজেলাগুলোর সঙ্গে রাঙামাটি সদরের কোনো বাস সার্ভিস চালু নেই। নৌ-পথেই একমাত্র ভরসা। কিন্তু নানিয়ারচরের চেঙ্গী সেতুর মাধ্যমে সেই দুর্গম পরিস্থিতি অনেকটাই লাঘব হবে। রাঙামাটি থেকে নানিয়ারচরের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। নানিয়ারচর থেকে লংগদু সদরে দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার এবং বাঘাইছড়ির দূরত্ব ৩০ কিলোমিটারের মতো। চেঙ্গী সেতু নির্মিত হওয়ায় এখন এক, দেড় ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি লংগদু বা বাঘাইছড়ি যাওয়া সম্ভব হবে।