Home চেম্বার যশোর চেম্বার নির্বাচন, প্রচারণা জমজমাট

যশোর চেম্বার নির্বাচন, প্রচারণা জমজমাট

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

যশোর:দীর্ঘ আট বছর পর আগামী ৭ জানুয়ারি  যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন। এই নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীরা ঘুম হারাম করে দিনরাত ছুটে চলেছেন ভোটারদের কাছে। ভোটাররাও নির্বাচন পেয়ে উৎফুল্ল।

এবারের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলেই মনে করছেন প্রার্থী, ভোটারসহ নির্বাচন নিয়ে খবরাখবর রাখা ব্যক্তিবর্গ। সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা যোগ্যদেরই নির্বাচিত করবেন।

যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ২১টি পদের মধ্যে ১২টি সাধারণ, ৬টি সহযোগী এবং ৩টি গ্রুপ শ্রেণির পদ রয়েছে। এসব পদের জন্য নির্বাচনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে দুটি প্যানেল। এর একটি কবু-মিজান-মিঠুর নেতৃত্বাধীন ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদ এবং মিজান-বাবু-সুজা-ঈদুলের নেতৃত্বাধীন ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ। প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি প্যানেলের প্রার্থীরাই ঘোষণা করেছেন, তারা নির্বাচিত হলে ব্যবসায়ীদের কল্যাণে কাজ করবেন। যশোর চেম্বারের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।

আগামী ৭ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে দুই হাজার ৪৩ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন। তাদের মধ্যে সাধারণ সদস্য রয়েছেন এক হাজার ৩১জন, সহযোগী সদস্য এক হাজার দশজন এবং গ্রুপ শ্রেলির ভোটার রয়েছেন দুইজন।
ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদের সাধারণ ১২টি পদে প্রার্থীরা হলেন এএসএম হুমায়ুন কবীর কবু, মিজানুর রহমান, আসাদুজ্জামান মিঠু, উজির হোসেন, মাহাবুব আলম লাবলু, মহাসিন আলী মিলন, রবিউল ইসলাম রবি, রাজু আক্তার, জাকির হোসেন পলাশ, আহসান কবির নিপু, কামাল হোসেন পলাশ ও আহসান হাবিব চৌধুরী। সহযোগী ছয় পদের প্রার্থীরা হলেন সাহিদুর রহমান টিটো, মশিয়ার রহমান, শাহীন রেজা, জিল্লুর রহমান, সাইদুর রহমান নিপু ও হাফিজুর রহমান শিলু।

ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাধারণ ১২ পদের প্রার্থীরা হলেন মিজানুর রহমান খান, শেখ আতিকুর বাবু, সাজ্জাদুর রহমান সুজা, আব্দুল হামিদ চাকলাদার ঈদুল, এহসানুর রহমান লিটু, কাশেদুজ্জামান সেলিম, সাকির আলী, শাহিনুর হোসেন ঠান্ডু, সায়েম সিদ্দিক, মকছেদ আলী, এজাজ উদ্দিন টিপু ও খাইরুল কবীর। সহযোগী ৬টি পদের প্রার্থীরা হলেন সৈয়দ শাহজাহান আলী খোকন, সোহেল মাসুদ হাসান টিটো, তৌহিদুর রহমান, আজিজুর রহমান খান, ইদ্রিস আলী ও রিজভী জাহাঙ্গির কিবরিয়া।

এছাড়া, সহযোগী সদস্য পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সৈয়দ এনামুল করীম নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

এদিকে, গ্রুপ শ্রেণির তিন পদের বিপরীতে দুইজন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। সে কারণে আর কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় এই দুইজন প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল ও শহিদুল ইসলাম মিলন।
ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদের প্রার্থী এএসএম হুমায়ুন কবীর কবু গ্রামের কাগজকে বলেন, তারা যশোর চেম্বার অব কমার্সকে ঢেলে সাজাতে চান। সংগঠনে যেসব অসংগতি রয়েছে তা দূর করবেন। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের ভ্যাট, ট্যাক্স, বিভিন্ন বিল নিয়ে সমস্যা সমাধান করবেন। এছাড়া, কমিটির মেয়াদ শেষ হলেই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বের হাতে ক্ষমতা প্রদানের নিশ্চয়তা দিয়েছেন তারা। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন নির্বাচনে প্যানেলসহ জয়লাভ করবেন।

ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্রার্থী শেখ আতিকুর বাবু বলেন, মূলত ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার্থে তাদের নির্বাচনে অংশ নেয়া। ব্যবসায়ীদের বিপদে আপদে পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, প্যানেল ধরেই তারা নির্বাচনে জয়লাভ করবেন।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র সহকারী কমিশনার কেএম আবু নওশাদ জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা গুরুত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। ৭ জানুয়ারি যশোর কালেক্টরেট স্কুল প্রাঙ্গণে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা জেলা শহর ছাড়াও তারা দলবেধে ছুটছেন উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত। ভোটারদের কাছে যেয়ে দিচ্ছেন তাদের স্বার্থ রক্ষার নানা প্রতিশ্রুতি। দীর্ঘদিন পর নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীদের উপস্থিতিকে উপভোগ করছেন সাধারণ ভোটার।

আলাপকালে সাধারণ ভোটাররা বলেন, প্রার্থীরা যত প্রতিশ্রুতিই দিক না কেন, সদস্যরা ভোট দেবেন হিসেব করেই। তবে, পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যেহেতু অনেক দিন পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সে কারণে নির্বাচন নিয়ে চেম্বার সদস্যদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সবাই চাচ্ছেন একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। ভোটারদের রায়ে যারা নির্বাচিত হবেন তারাই চেম্বারের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করবেন বলে ভোটারদের পাশাপাশি পর্যবেক্ষকদেরও প্রত্যাশা। এক্ষেত্রে তারা মনে করেন, এবার নির্বাচন হবে তীব্র প্রতিদ্বন্দি¦তাপূর্ণ। লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।