কখন যে কার জীবন কোন দিকে মোড় নেবে কে বলতে পারে!
টালিগঞ্জ পাড়ায় অনেক অভিনেতা, অভিনেত্রী রয়েছেন, যাঁরা কখনও ভাবেননি যে অভিনয় করে প্রতিষ্ঠা পাবেন। কিন্তু কখন যে জীবন বাঁক নিয়েছে তাঁরা নিজেরাও ঠাওর করতে পারেননি। তেমনই অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক। শুক্রবার তাঁর জীবন হয়তো দ্বিতীয়বার বাঁক নিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে উত্তরপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেছেন।
একটা সময় চানাচুর, আর কোল্ডড্রিংস কোম্পানির সেলসম্যানের কাজ করতেন কাঞ্চন। নিজেকে বলতেন বেচুবাবু। কাজ করতেন নামি এক পার্লারেও। কিন্তু অভিনয়ের নেশাটা ছিল ভিতরে। থিয়েটার করতেন কৌশিক সেনের দল স্বপ্নসন্ধানীতে। তারপর টেলিভিশনের গেম শো থেকে সিনেমা, ওয়েব সিরিজ—এই সময়ের বাংলা এন্টারটেনমেন্টের কমেডিতে তিনি একটি নাম।
কলকাতায় একসঙ্গে তিনবন্ধু একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। কাঞ্চন, রাজ চক্রবর্তী এবং রুদ্রনীল। রাজকেও দিদি ব্যারাকপুরে প্রার্থী করেছেন। আর রুদ্র তো এখন গেরুয়া শিবিরে। জল্পনা রয়েছে তাঁকেও প্রার্থী করতে পারে বিজেপি।
‘জনতা এক্সপ্রেস’ নামক একটি টিভি গেম শোয়ের সঞ্চালনা থেকে কাঞ্চনের উত্থান। নিজেকে ‘রোগা কাঞ্চন’ বলে পরিচয় দিতেন অভিনেতা। শুধু তিনি কেন, তাঁর চেহারা নিয়ে তাঁর বন্ধুরাও কম মজা করেন না। অভিনেতা বিশ্বনাথ বলেন, কাঞ্চন মল্লিকের বর্ষাকালে ছাতা লাগে না। বৃষ্টির ফাঁক দিয়ে গলে গলে চলে যেতে পারেন।
তারপর জিতের প্রথম ছবি এবং সুপারডুপার হিট সিনেমা সাথীতে অভিনয় করে সাড়া ফেলে দেন কাঞ্চন। কিছুদিন পর সঙ্গী নামের একটি সিনেমা আবার হিট। এই করতেই করতেই কাঞ্চন হয়ে ওঠেন টালিগঞ্জের তারকা মুখ। সারণ দত্ত পরিচালিত রাত বারোটা পাঁচ ছবিতে এক মানসিক ভারসাম্যহীনের চরিত্রে কাঞ্চনের অভিনয় সাড়া ফেলে দিয়েছিল।
সেই তাঁকে উত্তরপাড়া বিধানসভায় প্রার্থী করেছেন দিদি। যেখানে গতবার জিতেছিলেন প্রাক্তন সাংবাদিক তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চার দশকের ঘনিষ্ঠ প্রবীর ঘোষাল। এমনিতে উত্তরপাড়া সংস্কৃতির শহর। অলিতে-গলিতে বনেদিয়ানার ছাপ। সেই শহরে কাঞ্চনের হাতে দিদির জনতা এক্সপ্রেসের ভার। অভিনেতার জন্মদিন ৬ মে। ভোটের ফলপ্রকাশ ২ মে। এখন দেখার একুশের জন্মদিনের সেলিব্রেশন ২ তারিখ করতে পারেন কিনা কাঞ্চন।
-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক