*মানুষ খালি দেখে চলে যায়
*দোকানের ৯০ শতাংশ ক্রেতাই নারী
*দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ,বেচা-বিক্রি কম
*বিয়ের পর প্রথম ঈদ, তাই কেনাকাটা করতেই হচ্ছে
নাজমুল হোসেন
চট্টগ্রাম: রমজান মাস প্রায় শেষ। পতেঙ্গা এলাকা সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকলেও, ইপিজেডে গার্মেন্টস কর্মীদের মধ্যে ঈদের কেনাকাটার প্রবণতা বেশ লক্ষ্যনীয়।
ঈদ কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়েছেন গার্মেন্টস অধ্যুষিত ইপিজেড এরিয়া। ফুটপাতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। আর ঈদের কাছাকাছি সময়ে এসে সামাজিক দূরত্ব না মেনেই কেনাকাটা করছেন গার্মেন্টস কর্মীরা। কোনো রকমের করোনার ছাপ ছিলো না তাদের মাঝে।
বুধবার (১২ মে) সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করেই ফুটপাতের দোকান থেকে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। পতেঙ্গা এলাকার ইপিজেড থেকে কাটগড় পর্যন্ত সবগুলো শো রুম খোলা। অনেক দোকানে প্রবেশের সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজিংয়ের ব্যবস্থা দেখা গেলেও ফুটপাতগুলোতে তা নেই। বেশিরভাগ দোকানই গার্মেন্টস নারীদের দখলে। দোকানের ৯০ শতাংশ ক্রেতাই নারী।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিনই অত্যাবশ্যক প্রয়োজন ছাড়া এই মুহূর্তে ঘরের বাইরে থাকাটা অনিরাপদ বলে সতর্ক করলেও, তা অনেকেই মানছেন না।
পতেঙ্গা এরিয়ার ফুটপাতগুলোর ভিড় দেখে বিন্দুমাত্র বোঝার উপায় নেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনো ঝুঁকি রয়েছে। যারা বাইরে বের হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগ যদিও মাস্ক ব্যবহার করছেন, তবে কেনাকাটার শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা বিন্দুমাত্রও দেখা যাচ্ছে না।
একাধিক ক্রেতা জানান, ঈদের কেনাকাটা নয়, করোনার কারণে ১ মাস মার্কেট বন্ধ থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পোশাক কিনতে বের হয়েছেন তারা। রাস্তা-ঘাটে গণপরিবহন হর হামেশা চলতে দেখা গেছে। তাছাড়া রিক্সা, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল,সিএনজিচালিত অটোরিকশা তো আছেই।
বন্দরটিলা ফুটপাতে শার্ট ও প্যান্টের পসরা সাজিয়ে বসেছেন অনিক দাস নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি জানান, বিক্রি ভালোই হচ্ছে। পুলিশি কড়াকড়ি নেই তেমন। সকাল থেকেই ক্রেতা আসতে শুরু করেছেন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকায় ঈদে গ্রামে ফিরছে না মানুষ। এজন্য তারা কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছেন। মানুষ গ্রামে ফিরলে ফুটপাতে বিক্রি আরও ভালো হতো।
গার্মেন্টস কর্মী সুমি বলেন, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়,আমরা জানি। কিন্তু কিছু বিষয় সামনে চলে আসে যা এড়ানোও যায় না। আমার বিয়ের পর এটা প্রথম ঈদ। তাই কিছু ঈদ উপহার দিতেই হবে। আর সে জন্যেই কেনাকাটা করতেই হচ্ছে।
শফিকুল নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, মানুষ খালি দেখে চলে যায়। বেচা-কেনা তো হয় না। অন্য সময় ঈদের আগে কথা বলার সময় পাওয়া যেত না। এক কথায়, এক দামে বিক্রি করতাম।
স্টলিমিল আলী প্লাজার পাশে ফুটপাত থেকে দুই জোড়া জুতা কিনেছেন তাহামিনা। তিনি বলেন, সস্তা মনে হলো, তাই বাচ্চাদের জন্য দুই জোড়া জুতা কিনলাম। এবার ঈদে তেমন কিছু কেনার পরিকল্পনা ছিল না। কমে পেলাম বলে কেনা হলো।
বে-শপিং এর সামনে ফুটপাতের দোকানি নাবিল হোসেন বলেন, ঈদের হিসেব করেই দোকান খুলেছি। এখনই তো বেচাবিক্রির সময়। ঈদের পরতো আর বেচাবিক্রি হবে না। এখন দোকান না খুললে পরে সন্তানদের নিয়ে খাবো কি? তাই দোকান খুলেছি, যতটুকু পারি বিক্রি করছি। ক্রেতা অনেক তাই বেচাবিক্রিও ভালো।