মন্জুর মোর্শেদ রাজা, নীলফামারী : জলঢাকায় মাঠে মাঠে হলুদ বরণ সরিষা ফুলে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। মাঠ জুড়ে চির সবুজের বুকে কাঁচা হলুদের রঙের উৎসব এনেছে। যা প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে ভিন্ন রুপ। ফুলে ফুলে ভরে গেছে ক্ষেত।
রঙের এই মেলায় প্রকৃতি যেন নিজের খেলায় হাসছে। হলুদের এই চোখ জুড়ানো দৃশ্য দেখে যে কারো মন জুড়িয়ে যাবে। কাচা হলুদের ছন্দে হাসি ফুটেছে সরিষা চাষির মুখে। খরচ কম ও কম সময়ে বেশি ফলন ও ভালো দাম পাওয়ার আশায় জলঢাকা উপজেলার কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
এ উপজেলায় তেমন একটা সরিষার চাষ না হলে ও এ বছর বিপুল পরিমান সরিষার চাষ লক্ষ্য করা গেছে। কয়েকজন কৃষক জানান, সরিষা মুলত বোনাস ফসল। বীজ বপনের পর থেকে সর্বোচ্চ ৭০-৮৫ দিনের মধ্যেই সরিষা ঘরে তোলা যায়।অল্প পরিমাণ ইউরিয়া ও টিএসপি ছাড়া অন্য কোনো সারের প্রয়োজন হয় না। চারা গজানোর পর আগাছা ছাড়া কোনো পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না। সরিষা চাষে বিঘা প্রতি সর্বোচ্চ ১৫০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকা খরচ হয় বলে জানান সরিষা চাষিরা। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষার ফলন হয় ৬-৭ মণ। যার বাজার মূল্য প্রায় ৯ থেকে ১১ হাজার টাকা। সে বিবেচনা করে কৃষকের লাভ থাকে ৭ থেকে ৯ হাজার টাকা। কম খরচ লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছে এ উপজেলার সরিষা চাষিরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার সদর উপজেলায় ৮৩০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।এর মধ্যে বারি সারিষা-১৪, বারি সরিষা-১৫, বারি সরিষা-১৭ উল্লেখ যোগ্য হারে চাষ হয়েছে।
উল্লেখ্য যে উপজেলায় এবার যে সরিষা চাষ হয়েছে তার বেশিরভাগই সরকারি প্রণোদনার আওতায় ভুক্ত। সরকারিভাবে উপজেলায় প্রদর্শনী দেয়া আছে ৭০ জনের মধ্যে। উপজেলায় আবাদের আনুমানিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪৯৪ মেট্রিক টন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না জানান, “জলঢাকা উপজেলা সরিষা চাষের জন্য খুবই উপযোগী।এবছর উপজেলায় ব্যাপক হারে সরিষার চাষ হয়েছে। এছাড়া এ ফসলের আবাদ খুবই লাভজনক।তাই দিন দিন এ অঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে সরিষা আবাদের আগ্রহ বাড়ছে। তিনি আরও জানান, সরিষার সঙ্গে মৌমাছির চাষ করে মধু সংগ্রহ করে বাড়তি আয় করতে পারে এ জন্য উপজেলার গোলমুন্ডা,কাঠালী শিমুলবাড়ী,শৌলমারী ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নে ৫ টি করে মৌ-বক্স প্রধান করা হয়েছে।”