জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হলগুলোতে প্রভোস্টরা অভিযান চালিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এখনো হলে অবস্থান করছেন।
সোমবার (২২ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ১১টায় প্রভোস্টদের নেতৃত্বে আবাসিক হলগুলোতে অভিযান শুরু হয়। এ সময় প্রভোস্টদের সঙ্গে হলের অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা ছিলেন।
আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের প্রভোস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান অভিযান পরিচালনাকালে বলেন, ‘আমরা সরকারের নির্দেশনা জানাতে এসেছি। আইন ভঙ্গ করে হলে অবস্থান করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করছি, যাতে তারা আইন মেনে হল ছেড়ে দেয়।’
আ স ম ফিরোজ উল হাসান এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে যেতে পারে। গেরুয়া এলাকার বিকল্প তো হল হতে পারে না।’
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘গেরুয়া এলাকার সমস্যা নিয়ে আমরা কথা বলছি। আশুলিয়া থানায় মামলা করেছি।’
অভিযান চলাকালে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক প্রভোস্ট তাঁর নিজস্ব হলে অভিযান করছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। সবাইকে অনুরোধ করছি হল ছেড়ে দেওয়ার জন্য। তারপর প্রশাসনের অন্যদের সঙ্গে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই হল ছাড়বেন না বলে প্রভোস্টকে জানিয়ে দিয়েছেন।
প্রভোস্টের প্রশ্নের জবাবে ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমাদের অনলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা চলছে। গ্রামের বাড়িতে নেট সমস্যা থাকায় ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায় না।’
এই সময় মেহেদী আরো বলেন, ‘টিউশনি করে আমাকে চলতে হয় এবং পরিবারকেও টাকা দিতে হয়। হলের বাইরে থাকা আমার জন্য নিরাপদ নয়।’
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় প্রভোস্ট কমিটির সভা শুরু হয়। ১১টায় সভা শেষে সাংবাদিকদের জানানো হয়, ‘প্রতি হলে প্রভোস্টদের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হবে। প্রভোস্টরা শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করবেন ও বোঝাবেন, যাতে তারা আইন মেনে হল ত্যাগ করে।’
শনিবার শিক্ষার্থীরা হলের তালা ভেঙে হলে অবস্থান নেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের এই কার্যক্রমকে সিন্ডিকেট আইনের লঙ্ঘন বলে বিজ্ঞপ্তি দেয়। রবিবার রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের নিজ উদ্যোগে হল ত্যাগ করতে বলা হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা হলেই অবস্থান করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া এলাকায় সম্প্রতি ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে সমস্যা সৃষ্টি হলে তা নিয়ে শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ঘে জড়ায় উভয় পক্ষ। শুক্রবার রাতভর হামলা সংঘর্ষ হয়। এরপর হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।