অনিয়ন্ত্রিত জাহাজ ভাঙা কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে সরকারকে ফের ৪ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও সংস্থা কর্তৃক তেজষ্ক্রিয়তা যুক্ত জাহাজ নর্থ সিপ্রডিউসার (এম.টিপ্রসিউসার)-কে প্রদত্ত আমদানির অনুমতি, সৈকতায়নের অনুমতি এবং ভাঙার অনুমতি অবৈধ ঘোষণা করছে আদালত।আজ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক দায়েরকৃত রিটের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। আদালতে বেলার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট রিজওয়ানা হাসান এবং তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সাইদ আহমেদ কবীর।
নির্দেষণা গুলো হলো–১. জাহাজ আমদানির ক্ষেত্রে বর্জ্য মুক্ত সনদ প্রদান কারী ক্যাশবায়ার/বর্জ্য প্রত্যয়ন কারী সংস্থা/বর্জ্য পরিস্কার কারী সংস্থাদের তালিকা প্রস্তুত করণ এবং তাদের কার্যক্রম কঠোর আইনী বিধানের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা; ২. জাহাজের পতাকা পরিবর্তন রোধে এবং বর্জ্য বিষয়ে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে “ধূসর”এবং “কালো”পতাকাবাহী (অর্থাৎ আন্তর্জাতিক আইন ভেঙ্গে জাহাজ পরিচালনা কারী রাষ্ট্র যেমন: কমোরজ, পালাও, কম্বোডিয়া, তান জানিয়া, ভানুয়াতু, সেন্টকিটস এন্ড নেভিস, বেলিস, কুক আইল্যান্ড, সিয়েরা লিওন, টোগো ইত্যাদি) দেশ হতে জাহাজ আমদানি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা; ৩. জাহাজের বর্জ্য বিষয়ে পুরোপুরি এবং বিস্তারিত তথ্য ছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক ভাঙার জন্য কোন জাহাজ আমদানি ও সৈকতায়নের অনুমতি প্রদান না করা; এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বর্জ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক আইন বাসেল কন ভেনশন, দেশে প্রচলিত জাহাজ ভাঙা বিষয়ক বিধিমালা এবং রীটপিটিশননং ৭২৬০/২০০৮-তে প্রদত্ত বর্জ্য সংক্রাš Í বিধি বিধান প্রতি পালন নিশ্চিত করবে; ৪. পরিবেশ ছাড়পত্র অমান্যকারী জাহাজ ভাঙা ইয়ার্ডে জাহাজের আমদানি ও ভাঙা অনুমোদন দেয়া যাবে না।
এছাড়া, হাইকোট এম.টি প্রডিউসারের পক্ষে দেয়া শিল্প মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের দেয়া আমদানি, সৈকতায়ন ও ভাঙার অনুমতি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইন এবং আদালতের আদেশের পরিপন্থী ও বেআইনী ঘোষণা করেন। তবে জাহাজটির বেশকিছু অংশ ভাঙা হয়ে গেছে বিবেচনায় আদালত বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশন, পরমানু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং মেগা পোর্ট অথরিটির যৌথ তত্ত্বাবধানে এবং একজন জৈষ্ঠ্য বিজ্ঞানীর সার্বক্ষনিক উপস্থিতিতে বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশনকে জাহাজটির বর্জ্য বিষয়ে শতভাগ নিরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য একটি কর্ম পরিকল্পনা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন। এ নিরীক্ষার ক্ষেত্রে জাহাজটির আমদানি কারক জনতা স্টীল করপোরেশন সকল ব্যয় বহন করবে। তবে আমদানি কারক নিরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেনা। একইসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর পরিবেশ ছাড়পত্রের সংশ্লিষ্ট শর্ত ভঙ্গ করে দূষণ করার দায়ে আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান জনতা স্টীল করপোরেশনকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিতে পারবে।।