মুতাছিন বিল্লাহ, জীবননগর:চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে সম্প্রতি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য। প্রায় প্রতি বৃহস্পতিবারে চুয়াডাঙ্গা-হাসাদহ রুটের বাসের মধ্যে বিভিন্ন পেশাজীবীর কেউ না কেউ তাদের খপ্পরে পড়ে খোয়াচ্ছেন টাকা-পয়সা ও জিনিসপত্র।
অজ্ঞান পার্টিচক্রের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তৎপরতা তেমন দৃশ্যমান নেই বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
তবে পুলিশের দাবি, ভুক্তভোগীদের অনেকেই থানায় অভিযোগ করেন না। অভিযোগ না করায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও তেমন সুযোগ থাকে না। প্রকৃত ভুক্তভোগীর পরিসংখ্যানও উঠে আসে না।
গত বৃহস্পতিবার পাবনার একজন অজ্ঞান হয়ে হাসাদহ বাস স্ট্যান্ডে পড়ে ছিলো। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
আগের বৃহস্পতিবারে আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাস ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রাম থেকে জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নের শিয়ালমারি পশুহাটে গরু ক্রয়ের উদ্দেশ্যে রুহুল হোসেন আসছিলেন বাসের মধ্যে তাকে চেতনানাশক ঔষধ ব্যবহার করে গরু ক্রয়য়ের জন্য তার কাছে থাকা আনুমানিক এক লক্ষাধিক টাকা নিয়ে সটকে পড়ে একটি চক্র। পরে বাসের হেলপার তাকে হাসাদাহ বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। এ সময় স্থানীয়রা অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে চিকিৎসার জন্য জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, যে কোন উৎসব এলে বেড়ে যায় অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির সদস্যদের তৎপরতা। বিশেষ করে ঈদ উপলক্ষে পশু ব্যবসায়ী ও ক্রয়-বিক্রয় করা মানুষকে নিঃস্ব করার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে তারা। এবার কোন উৎসব ছাড়ায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে এসব প্রতারক পার্টির কয়েকটি চক্র।
পুলিশের তথ্যানুযায়ী অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা সাধারণত চার থেকে পাঁচজন মিলে একটি টিম হয়ে কাজ করে। শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ আর হাটে আসা ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা অজ্ঞান পার্টির প্রধান টার্গেট। বিশেষ করে পশুহাটে গরু ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা এখন এসব চক্রের প্রধান টার্গেটে পরিণত হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানায়, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা খাবারের সঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার ‘ডায়াজিপিন’ ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ যাত্রীদের কৌশলে সেবন করিয়ে অচেতন করেন। এসব ওষুধ ডায়াবেটিস ও লিভারে সমস্যাগ্রস্ত রোগীদের জন্য মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মোঃ আব্দুল খালেক বলেন,আমরা জনগণের সর্তকতার জন্য মোড়ে মোড়ে মাইকিং করছি, এ পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। তবে আমরা সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে আছি।