বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ: আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক দিয়েছিলেন বলে এমপি (সংসদ সদস্য) হইছিলেন। আর সেই শেখ হাসিনার প্রার্থীর বিরোধীতা করছেন। আগামীতে নৌকা পাবেন না। জীবিত থাকতে আগামীতে নৌকা পেতে দিবো না।
শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বন্দরের কবিলের মোড় এলাকায় নির্বাচনী কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংসদ শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে তিনি এই কথা বলেন।
বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এই সভায় কেন্দ্রীয় আরও কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন
নানক বলেন, ‘মনে রাখবেন নৌকা মার্কা শেখ হাসিনা দিছে দেইখা আপনি এমপি হইছিলেন। বুঝাতে পারছি? আকার ইঙ্গিতে বুঝাতে পারছি কি কইতে চাই? শেখ হাসিনা প্রার্থী দিয়েছেন আর শেখ হাসিনার সেই প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিরোধীতা করছেন। আগামীতে নৌকা পাবেন না। আমরা জীবিত থাকতে আগামী নির্বাচনে আর নৌকা তাকে পেতে দিবো না।
জাহাঙ্গীর কবির নানক সরাসরি নাম উল্লেখ করে না বললেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের অবস্থান নিয়ে শুরু থেকেই ক্ষুব্দ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। শামীম ওসমান নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বলেও আলোচনা রয়েছে। দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য তাকে উদ্দেশ্য করেই এমন বক্তব্য দিয়েছেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের সাথে প্রচারণায় দেখা গেছে। এই প্রসঙ্গ তুলে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এই নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির বন্ধুদের এক ভিন্ন চরিত্র, ভিন্ন চেহারা। নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেউ কোনো ষড়যন্ত্র করে রেহাই পাবেন না। কোনো হুমকি-ধমকি, কোনো মিথ্যাচারের কাছে এই বন্দরের মানুষেরা হার মানবে না। পরাজিত হবে না। আগামী ১৬ জানুয়ারি নৌকার বিজয় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কেন্দ্রীয় এই নেতা।
নারায়ণগঞ্জে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া দলীয় লোকজনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, শেখ হাসিনা তার নেতা-কর্মীদের আগলে রাখে। কিন্তু যদি কেউ বারবার অপরাধ করতে থাকে, অন্যায়ের পর অন্যায় করতে থাকে তখন শেখ হাসিনা একবার রুখে দাঁড়ালে, একবার ক্ষেপে গেলে ছাড় পাবেন না। বাঘে ধরলে ছাড়া পাওয়া যায়, শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়া পাওয়া যায় না। শেখ হাসিনা যখন খাবলে ধরবে কেউ তোমাদের রক্ষা করতে পারবে না। এখনও সময় আছে তোমরা ভালো হয়ে যাও।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশীদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।