জেদ্দা: বিশ্বের উচ্চতম ভবনের কথা বললেই বুর্জ খলিফার নাম সবার আগে আসে। ২০১০ সালে ২,৭১৭ ফুট (৮২৮ মিটার) উচ্চতায় তৈরি এই ভবনটি দুবাইয়ের গর্ব। তবে সৌদি আরব এবার এক ধাপ এগিয়ে জেদ্দা টাওয়ার নির্মাণ করছে, যা হবে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু আকাশচুম্বী ভবন।
জেদ্দা টাওয়ার সম্পন্ন হলে এর উচ্চতা হবে ৩,২৮১ ফুট (১,০০০ মিটার), যা বুর্জ খলিফাকে ছাড়িয়ে যাবে। নানা বিলম্বের পর ২০২৫ সালে নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু হয়েছে এবং ২০২৮ বা ২০২৯ সালের মধ্যে এটি সম্পন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে। জেদ্দা শহরে নির্মাণাধীন এই ভবনটি পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠবে। এটি পেনাং ভাসমান মসজিদ এবং ঐতিহাসিক আল বালাদ এলাকার মতো স্থাপত্য বিস্ময়ের তালিকায় যুক্ত হবে।

সৌদি আরবের ভবিষ্যত পরিকল্পনার প্রতীক হিসেবে গড়ে ওঠা জেদ্দা টাওয়ারে বিলাসবহুল আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট, অফিস, হোটেল এবং বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্যবেক্ষণ ডেক থাকবে, যেখান থেকে শহরের বিস্তৃত দৃশ্য উপভোগ করা যাবে। সৌদি সরকারের আধুনিক স্থাপত্যের অংশ হিসেবে এই টাওয়ার নির্মাণে মোট ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে, যার মধ্যে ভবনের জন্য বরাদ্দ ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
জেদ্দা টাওয়ারের নকশায় ভবিষ্যতবাদী স্থাপত্য শৈলী ব্যবহার করা হয়েছে, যা এটিকে মসৃণ ও অত্যাধুনিক চেহারা দেবে। স্থপতি অ্যাড্রিয়ান স্মিথ এবং গর্ডন গিল সৌদি আরবের প্রাকৃতিক ভূদৃশ্যের অনুপ্রেরণা নিয়ে একে তালগাছের মতো আকৃতি দিয়েছেন। প্রশস্ত ভিত্তি থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে সরু হয়ে যাওয়া এই নকশা ভবনটির স্থিতিশীলতা বাড়াবে এবং প্রবল বাতাস সহ্য করতে সক্ষম করবে।

বহুমুখী ব্যবহারের জন্য নির্মিত জেদ্দা টাওয়ারে আবাসন, বাণিজ্যিক অফিস ও পর্যটকদের জন্য অত্যাধুনিক সুবিধা থাকবে। এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হবে বিশ্বের উচ্চতম পর্যবেক্ষণ ডেক, যা আকাশচুম্বী সৌন্দর্যের নতুন মাত্রা যোগ করবে। এছাড়া, টাওয়ারের একটি অংশে বিলাসবহুল ফোর সিজনস হোটেল থাকবে, যা পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ। ৯৮ ফুট প্রশস্ত একটি বহিরঙ্গন বারান্দা তৈরি করা হয়েছে, যা মূলত হেলিপ্যাড হিসেবে পরিকল্পিত ছিল, তবে এখন তা দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
জেদ্দা টাওয়ার শুধু সৌদি আরবের গর্বই নয়, বরং এটি আধুনিক স্থাপত্য ও প্রকৌশলের এক নতুন মাইলফলক হয়ে উঠবে। সৌদির এই আকাশচুম্বী ভবন বাণিজ্য, পর্যটন ও সৌন্দর্যের এক নতুন সংযোজন হিসেবে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলতে প্রস্তুত।